নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাপ মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে দেশের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র তর্জনী ভাস্কর্য ‘মুক্তির ডাক’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ম্যুরালটির দিকে তাকালেই ভেসে উঠবে অগ্নিঝরা ৭১’র ৭ই মার্চ। সেই সঙ্গে ভেসে ওঠে একটি রাষ্ট্র ও জাতির রক্তাক্ত ইতিহাস।
ভাস্কর্যটি বিশ্বের ‘হস্ত’ভাস্কর্যের মধ্যে উচ্চতার দিক থেকে তিনটির একটি। যার উচ্চতা ৪১ ফুট। ১৩ মাস আগে শুরু করা ঐতিহাসিক এ ভাস্কর্যটি কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নরসিংদী শহরের প্রবেশ মুখে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর সাহেপ্রতাপ মোড়ে নির্মিত ভাস্কর্যটি এখন উন্মোচনের অপেক্ষায়।
ভাস্কর্যটির বেদীর চারপাশে থাকবে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফার দাবি, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থ্যান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো টেরাকোটার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
ইতিমধ্যে মূল ভাস্কর্যটির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। মূল বেদীর চারপাশে নান্দনিক ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও দ্রুত গতিতে ল্যান্ডস্কেপের কাজ চলছে।
এ ভাস্কর্যটি ভাস্কর হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী অলি মাহমুদ। এর আগেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার দা সুর্যসেন এর আবক্ষ ভাস্কর্য, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর শেষ সীমানায় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ম্যুরাল বাংলার ঈগল, নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেবা বৃত্ত, জাগ্রত জাতিসত্তা, লৌহজং উপজেলা কার্যালয়ের সামনে হিমালয়, রায়পুরা কলেজে মহানায়ক নামক শিল্পকর্ম নির্মাণ করে দারুণ প্রশংসিত হন এই তরুণ ভাস্কর।
অলি মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই শক্তি, উৎসাহ আর প্রেরণা। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তার অসাধারণ বাগ্মিতা, মানবিকতা, মানুষের প্রতি সহমর্মিতার গুণেই তিনি চির অমলিন। তার ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের শিহরিত করে, অনুপ্রাণিত করে। তার উদার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শোষণহীন সমাজ গড়ার প্রত্যয় আমাদের উজ্জীবিত করেছে। বঙ্গবন্ধু বাঙলি জাতিকে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বজ্রকণ্ঠে স্বাধীনতার যে ইশারা দিয়েছিলেন সেই বিষয়টি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস। তবে ৪১ ফুট উঁচু শিল্পকর্মটির মূল বেদীতে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় স্থান পেয়েছে। মূল ভাস্কর্যটি বঙ্গবন্ধুর তেজোদৃপ্ত তর্জনীর প্রকাশ পেয়েছে। এই তর্জনীর ইশারায় আমারা পেয়েছি স্বাধীন ভূখণ্ড, একটি লাল সবুজের পতাকা।
তিনি জানান, মুজিববর্ষের শুরুতেই উদ্বোধন করার ইচ্ছে ছিল। এখনো সৌন্দর্য বর্ধনের কাজের কিছু অংশ বাকি আছে। আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ করে নরসিংদীসহ পুরো দেশবাসীকে নান্দনিক এই ঐতিহাসিক শিল্পকর্মটি উপহার দিতে পারবো।
জয়নিউজ/পিডি