জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আশাবাদী ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিনিধি দলের সদস্য ড. আকশাই মানসিং। বাংলাদেশের কোভিড-১৯ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত জৈব সুরক্ষা বলয় পর্যবেক্ষণ করে নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।
একইসঙ্গে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে পা রেখে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবে অতিথি দল। তিন দিন পর নিজেদের মধ্যে অনুশীলন শুরু করতে পারবেন তারা। এ সময়ে তিনবার করোনা পরীক্ষা হবে। তিনবার নেগেটিভ আসলে বাংলাদেশের দেওয়া সব সুবিধা ব্যবহার করে অনুশীলন শুরু করতে পারবেন জেসন হোল্ডাররা।
নিরাপত্তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই উইন্ডিজের নিরাপত্তা ম্যানেজার পল স্লোওয়ের। আগের অভিজ্ঞতা থেকে তার দাবি, যে কোনও আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজন করার অবকাঠামো ও প্রয়োজনমাফিক সব চাহিদা পূরণ করার সক্ষমতা বিসিবির রয়েছে।
বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জৈব সুরক্ষা বলয় পরিদর্শন করতে গত শনিবার ঢাকা আসেন উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের দুই প্রতিনিধি। প্রস্তাবিত ভেন্যু এবং সব সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করেন তারা। বিকেএসপি, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় স্টেডিয়ামের সব অবকাঠামো, টিম হোটেল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন অতিথিরা।
নতুন বছরের শুরুতে বাংলাদেশে আসার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বাংলাদেশে সব সুযোগ সুবিধায় নিজেদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন আইসিসি ও ক্রিকেট উইন্ডিজের মেডিক্যাল দলের সদস্য ডা. আকশাই মানসিং।
মিরপুরে একাডেমি ভবনের সামনে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিসিবি আমাদেরকে প্রটোকলসমূহের যে বর্ণনা দিয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত গভীর চিন্তার পরিচয় দেয়। যেহেতু আমাদের আসার আগে তাদের তিনটি টুর্নামেন্ট হয়েছে এবং একটি হচ্ছে, সুতরাং তারা অভ্যস্ত। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমরা যা দেখেছি তা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’
এই কর্মকর্তা আরও যোগ করেন, ‘এখানে সুযোগ-সুবিধা দারুণ, কোভিড প্রটোকল অত্যন্ত স্পষ্ট ও নিখুঁত। যে হাসপাতাল আর হোটেলগুলোয় আমরা গিয়েছি, সেগুলোর আচরণ ও কাজ কোভিড-১৯ এর জন্য সুপারিশ করা আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, স্বাস্থ্যগত দিক থেকে আমরা খুবই খুশি।
এখন আমাদের পর্যবেক্ষণগুলোর প্রতিবেদন ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোর্ড অব ডিরেক্টরের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা যা দেখেছি, তা বিশ্বের যে কোনও জায়গার আয়োজনের চেয়ে কম নয়। এখন পর্যন্ত আমরা খুবই খুশি।’
তিনটি করে টেস্ট ও ওয়ানডে এবং দুটি টি-টোয়েন্টি খেলতে অতিথিদের আসার কথা। তবে শোনা যাচ্ছে একটি টেস্ট কমানোর চিন্তা করছে দুই বোর্ড। সেজন্য সফরের সূচি চূড়ান্ত হয়নি বলে জানালেন আকশাই।
তবে বাংলাদেশে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অতিথিদের কোনও আপত্তি নেই, তা নিশ্চিত করেছেন তিনি, ‘কোভিড নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশে এসে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। শুধু কোয়ারেন্টাইন নয়, কোভিড পরীক্ষার ফল নেগেটিভ লাগবে। এখানে আসার আগে অন্তত একটি নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগবে। পাশাপাশি এখানে তিনটি টেস্টের ফল নেগেটিভ হতে হবে। সব প্রক্রিয়া সাতদিনের।’
কোয়ারেন্টাইনের প্রথম তিনদিন ক্রিকেটাররা হোটেল রুমে থাকবেন। তৃতীয় দিনের পর দ্বিতীয় টেস্ট। তা নেগেটিভ আসার পর নিজেদের স্কোয়াডের ভেতরে অনুশীলন শুরু হবে। সেখানে অন্য কাউকে যুক্ত করা হবে না। সাত দিনের পর অন্যদের সংস্পর্শে যেতে পারবেন খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশের নেট খেলোয়াড়দের নিয়ে সেশন তখনই শুরু হবে।
নিরাপত্তা প্রতিনিধি পল স্লোওয়ে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে ২০১৬ যুব বিশ্বকাপে এসেছিলাম। আমি এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। আমি খুশি যে, আমরা যা দেখেছি, সেখানে আমাদের কাছে উপস্থাপন করা নিরাপত্তা পরিকল্পনা এবং প্রোটোকলগুলো খুবই সন্তোষজনক। আমার কোনও সন্দেহ নেই যে সেই পরিকল্পনাগুলো যদি যেভাবে লেখা আর আলোচনা করা হয়েছে সেভাবে প্রয়োগ করলে কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটবে না।’
নির্ধারিত সময়েই সিরিজটি আয়োজন হবে বলে আশাবাদী বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, প্রতিনিধি দল বেশ সন্তুষ্ট। তারা দেশে ফিরে রিপোর্ট দেবেন। সেটা উইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড দেখবে। আশা করছি সব ঠিকঠাক থাকবে এবং তারা জানুয়ারির মাঝে আসবে।