যে মন্ত্রে এখনো সৎ এলজিইডি মন্ত্রী

ছোটবেলায় বাবার বলা কিছু কথার কারণে এখনো যতটা সম্ভব সৎপথে চলার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

- Advertisement -

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের ‘চেইন হ্যান্ডওভার সিরোমনি ২০২১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন তিনি।

- Advertisement -google news follower

মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমি ধনী পরিবারের সন্তান নই। পারিবারিকভাবে আমি কোনো ধন-সম্পদ পাইনি। কিন্তু আমি গরীব মানুষ নই। আমার বাবা অত্যন্ত আল্লাহওয়ালা মানুষ ছিলেন। আমার বাবা-মা গ্রামে থাকতেন, গ্রামে আমার জন্ম হয়েছে। আমার বাবা কলেজে চাকরি করতেন। আমি যখন স্কুলে পড়ছি, তিনি অবসর নিয়েছেন। আমাদের আয়ের মূল উৎস ছিল কৃষি। তা দিয়ে সংসার কোনমতে চলতো।

‘প্রথম রোজগার করে আমি বাবার হাতে ১০০ টাকা দিয়েছিলাম। ওনি খুশি হলেন। এরপর হঠাৎ করে মুখটা কালো করে ওনি বললেন, বাবা তোমরা বড় হয়েছো, রুজি-রোজগার করবা, সন্দেহ থাকলে এই টাকা আমাকে দিও না। আমার জমি-জমা যা আছে তার কিছু অংশ বিক্রি করে খেয়ে গেলেও আমার বাকি জীবন চলে যাবে। আমি সারাজীবন ভালো ও সৎ রোজগারের উপর নির্ভরশীল ছিলাম। বাকি জীবন আমি অসৎ রোজগার থেকে মুক্ত থাকতে চাই।’

- Advertisement -islamibank

মন্ত্রী বলেন, তখন বাবা ছাড়া আমার আর কেউ নেই যে টাকা দিতে হবে। শুধু বাবাকে দেওয়ার জন্য আমার টাকা রোজগার করা। বাবার প্রতি আমার সর্বোচ্চ আবেগ ও শ্রদ্ধা কাজ করতো। ১০ টাকাও যদি রোজগার করতে পারি সেটা বাবাকে দিতে পারলে তিনি খুশি হবেন— এটা আমার কাছে ছিল আবেগের বিষয়। আর এই টাকাটা যদি অসৎ পথে রোজগার হয় তাহলে বাবাকে দিলে তিনি মনে কষ্ট পাবেন। কারণ তিনি আমাকে নিষেধ করেছেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তখন আমি বিশ্বাস করতাম না যে লেখার মধ্যে কোনো মিথ্যা থাকতে পারে। বলার মধ্যে মিথ্যা থাকতে পারে— এটা আমি বিশ্বাস করতাম। বিশ্বাস করতাম যে কথার মধ্যে মিথ্যা বলে মানুষ। কিন্তু মিথ্যা কথা লেখে এটা কিন্তু তখন পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করতাম না, আমি তখন এতটা বোকা ছিলাম।

‘সে সময় বাবা সৎপথে রোজগার নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো আমি মেনে চলার চেষ্টা করে আসছি সত্যিকার অর্থে। আমি জানি না এটা আপনারা বিশ্বাস করবেন কি-না, কিন্তু এটা সত্য। সিরিয়াসলি আমি চেষ্টা করে আসছি। যতটুকু সততার সঙ্গে টাকা রোজগার করার সুযোগ ছিল, শতভাগ পারা যায়নি আমাদের সমাজের কারণে। কিন্তু এক ইঞ্চিও এদিক-সেদিক হইনি যতটুকু পারা গেছে।’

‘এখন আমি মন্ত্রী, এখানে অনেক সুযোগ আছে। বিলিয়ন, মিলিয়ন টাকা অবৈধ পথে আয়ের সুযোগ আছে। কিন্তু আমি এখনো চেষ্টা করি নিজেকে সবসময় স্বচ্ছ রাখতে। এখন আমি মোটামুটি ধনী মানুষ। আমার কাছে এত টাকা নেই, কিছু টাকা যা আছে আমার জন্য যথেষ্ট, চলবে। আমি আমার বাবার কথাটা কেন বললাম, আমি মাঝে মাঝে বলি, খুব সৎভাবে বলি, আমি যদি পেরে থাকি, কেন এটা হবে না?’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। কি নোট স্পিকার ছিলেন জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট। এতে জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের সাবেক সভাপতি রইসুল উদ্দিন সৈকত, জসিম আহমেদ, মো. গিয়াস উদ্দিন, মাশফিক আহমেদ রুশাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিদায়ী ও নতুন সভাপতি।

জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের বিদায়ী সভাপতি শহীদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান চেইন হস্তান্তর করেন জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. টিপু সুলতান সিকদারকে।

অনুষ্ঠানে নতুন কমিটির নির্বাহী সহসভাপতি ইঞ্জি. এসএম ইশতিয়াক উর রহমান, সহসভাপতি রাজু আহমেদ, মোহাম্মদ জালাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সাহেদ, কোষাধ্যক্ষ মো. আশরাফ বান্টি, জেনারেল লিগ্যাল কনসাল জেসির চৌধুরী, স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট টু প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রুবায়েল শাফি, পরিচালক আয়াজ ইসলাম চৌধুরী, মো. আবু তৈয়ব, মোহাম্মদ ইসমাইল, সুদর্শন দেবাশীষ দাশ, ইঞ্জি. এমএন আব্বাস আদনান ও মীর মোহাম্মদ নাসির এবং বিদায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিদায়ী সভাপতি।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM