প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাত ১টা ১৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর জানানো হবে।
এইচ টি ইমাম ফুসফুস, কিডনি, হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।
এইচ টি ইমামের জন্ম ১৯৩৯ সালে। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তিনি।
রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি নেন এইচ টি ইমাম। চাকরি জীবনের প্রথমে রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের চাকরিতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এইচ টি ইমাম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব হন।
অবসর নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন এইচ টি ইমাম। দলের নির্বাচন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দায়িত্ব পান এইচ টি ইমাম। প্রথমে জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ২০১৪ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জের একটি আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।