খাগড়াছড়িতে চিরকুট লিখে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন নাইমুল হাসান মিশন (২১) নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। সে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল বলে জানিয়েছে পরিবার।
শনিবার (৬ মার্চ) সকালে তার রুম থেকে পরিবারের সদস্যরা ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। নিহত মিশন রামগড়ের ফেনীর কুল এলাকার সেনাবাহিনীতে চাকুরিরত মো. কামাল উদ্দীনের ছেলে।
পরিবার জানায়, রাতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফেরেন মিশন। খাবার খেয়ে স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে যায়। সকালে তার রুমের দরজা না খোলায় ছোট ভাই জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে মিশনকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে দরজা ভেঙে পরিবারের সদস্যরা তার লাশ উদ্ধার করে।
মিশনের রুমে পাওয়া সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার বেঁচে থাকার জন্য কোন ইচ্ছে নেই। তাই আমি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। ডারউইন বলেছিলেন “Survival for fittest. but i not even fit”. আমার জন্য কেউ কখনো কষ্ট পেয়ে থাকেন পারলে মাফ করে দিয়েন। আম্মু আমাকে মাফ করে দিয়েন। লিমনের (ছোট ভাই) খেয়াল রাখিয়েন।
আব্বু আমাকে সফল করার জন্য অনেক কিছু সহ্য করেছেন। আমি পারিনি। তাই আমি ক্ষমাপ্রার্থী। এই দুনিয়া আমার জন্য নয়, সবাই পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। বিদায়।’
মিশনের পরিবারের এক সদস্য জানান, সে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। বেশ কয়েকবার চিকিৎসাও করানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিষন্নতা এবং হতাশায় ভুগছিলেন। তবে আজ তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল।
এদিকে মিশনের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পুরো এলাকায়। স্থানীয়রা জানায়, সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। চবিতে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সে বিষন্নতায় এবং হতাশায় ভুগতে থাকে।
রামগড় থানার এসআই অজয় চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়িতে পাঠানো হবে।