“কেউ যখন খেলা শুরু করে, তখন তার একটা স্বপ্ন থাকে। আমরা স্বপ্ন দেখতাম সেরা হওয়ার। আমাদের আজকের প্রাপ্তির জন্য পরম করুণাময় মহান আল্লাহর দরবারে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এছাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তিময় স্যারের প্রতিও আমরা কৃতজ্ঞ। জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
সম্প্রতি জাতীয় মহিলা কাবাডি দলে জায়গা পাওয়া রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার ভুবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী জয়নিউজকে এসব কথা বলেন।
তারা হল বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী বেবী চাকমা ও একই শ্রেণীর নিরতী চাকমা, সুচরিতা চাকমা এবং একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষের মেয়েবী চাকমা। গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারে বসে জয়নিউজের সাথে কথা হয় তাদের। এসময় তাঁরা তাদের স্বপ্নের কথা জানান।
বেবী চাকমা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা প্রভাত চাকমা, মা লতিকা চাকমা। ১নং জুরাছড়ি ইউনিয়নের কুসুমছড়ির এক গুচ্ছ গ্রামে তাদের বাস। বেবী চাকমা জাতীয় মহিলা কাবাডি দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তারা এখন ভীষণ খুশি।
একই ইউনিয়নের যক্ষা বাজারের হরিলাল চাকমার মেয়ে সুচরিতা চাকমা জাতীয় দলের কাবাডি খেলতে যাবে শুনে বাজার জুড়ে আনন্দ বিরাজ করছে। একই ইউনিয়নের ডেবাছড়ার মেয়েবী চাকমার পিতা-মাতাও চায় তাদের মেয়ে দেশের জন্য কাজ করুক। তারাও বেশ খুশি।
বনযোগীছড়া ইউনিয়নের নিরতা চাকমা। বাবা হরিচন্দ্র চাকমা, মা সুমিত্রা চাকমা মেয়ে দেশের উচ্চ পর্যায়ে কাবাডি দলের পক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তারা চান দেশে ও এলাকার সুনাম রক্ষায় তাদের মেয়ে নিরলসভাবে খেলে বিজয় অর্জন করুক।
বেবী চাকমা, নিরতী চাকমা, সুচরিতা চাকমা এবং মেয়েবী চাকমা জয়নিউজকে জানান, কাবাডিতেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। দেশে পিছিয়ে পড়া নারীদের কাবাডি খেলায় এগিয়ে নিতে একদিন দেশের সেরা কোচ হতে চাই।
ভুবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তিময় চাকমা জয়নিউজকে জানান, গত ২০১৭ সালে রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি মহিলা কাবাডি দল জাতীয় পর্যায়ের খেলায় রানার্সআপ অর্জন করেছি। সে সময় জাতীয় কাবাডি ফেডারেশন তাদের প্রাথমিক নির্বাচন করে। এবার চূড়ান্ত বাছাই করে তাদের জাতীয় মহিলা কাবাডি দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা জয়নিউজকে জানান, দুর্গম পাহাড়ের চার কিশোরী জাতীয় কাবাডি দলে খেলার সুযোগ পেয়েছে। এটা সত্যি গর্বের বিষয়। আমরা উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের সবসময় সহযোগিতা করবো।
জয়নিউজ/শহীদ