করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে গত দেড় বছর ধরে ক্ষুধার্তের হারে উল্লফন ঘটেছে। সোমবার (১২ জুলাই) প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির প্রথম বছরেই বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষ বেড়েছে ১৮ শতাংশ, যা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও), ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি), ইউনাইটেড নেশনস চিল্ড্রেন ইমার্জেন্সি ফান্ড (ইউনিসেফ), ইউএন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) যৌথ উদ্যোগে করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১১ কোটি ৮০ লাখ; শতকরা হিসেবে এই বৃদ্ধির হার প্রায় ১৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ক্ষুধার্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যের অনিশ্চয়তাও তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে বিশ্বে। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি তিনজন মানুষের একজন এই অনিশ্চয়তার শিকার।’
বিশ্বের যেসব দেশের মানুষ মহামারির আগে থেকেই মাঝারি বা গুরুতর খাদ্য সংকটে ছিলেন, গত দেড় বছরে তার কোনও উন্নতি হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে; বরং নতুন এই বিপুল পরিমাণ ক্ষুধার্ত মানুষ ২০২০ সালে যুক্ত হয়েছেন তাদের সঙ্গে।
তবে এই তীব্র খাদ্য সংকটের জন্য শুধু করোনা নয়, এর পাশাপাশি যুদ্ধ-সংঘাত, জলবায়ুগত পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মহামারির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক স্থবিরতাকেও দায়ী করেছে জাতিসংঘ।
এ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘করোনা হচ্ছে সংকটের এই বিশাল হিমশৈলের চূড়া মাত্র। যুদ্ধ-সংঘাত, জলবায়ুগত পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতাও এই সংকটের জন্য দায়ী। তবে এটি সত্য যে, পুরো সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে করোনা মহামারি।’