দেশে করোনা পরিস্থিতি দিনের পর দিন ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারকে চলমান লকডাউন আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চলতি লকডাউন শেষ হচ্ছে আগামী ৫ আগস্ট।
এদিকে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের একটি বড় অংশ লকডাউন না দেওয়ার পক্ষে অভিমত জানিয়েছে সরকারকে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সরকারি সূত্র বলছে, মানুষ এখন করোনা নিয়ে মোটেও ভয় পাচ্ছে না। প্রথম দিকে যখন করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল তখন একজন মানুষ আক্রান্ত হলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তো, ওই পরিবারকে একঘরে করা হতো। এখন সেগুলোর বালাই নেই। বরং একই ফ্ল্যাটে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রেখেই আরেকজন বাইরে যাচ্ছে এবং সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ করোনার ভীতি থেকে বেরিয়ে এসেছে। যার ফলে এখন লকডাউন নতুন করে দেওয়া প্রায় অসম্ভব বলেই সরকারের একটি অংশ মনে করছে।
সূত্র বলছে, সরকার লকডাউন কথাটি ব্যবহার না করে বরং কিছু কিছু বিধিনিষেধ রেখে সবকিছু চালু করতে চায়। ইতোমধ্যে সরকারের নীতিনির্ধারকরা লকডাউনের বিকল্প একটি ৭ দফা প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—
১. জনসমাগম হয় এমন কর্মসূচিগুলো ছাড়া অন্য সব কিছু খুলে দেওয়া।
২. গণপরিবহন শর্তসাপেক্ষে চালু করা, যে অর্ধেক আসনে গণপরিবহন চালানোর শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন আবার চালু করা।
৩. বিয়ে ও পর্যটনকেন্দ্র ইত্যাদি আপাতত বন্ধ রাখা।
৪. মাস্ক পরার ক্ষেত্রে জনসচেতনতা তৈরি করা এবং পাড়ায়-মহল্লায় স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা ইত্যাদি বিষয়ে একধরনের জাগরণ তৈরি করা। স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে মাঠে নামানো।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা।
৬. গণটিকা কর্মসূচি।
৭. পরীক্ষার হার বাড়ানো।
এই ৭ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে লকডাউন থেকে সরকার বেরিয়ে আসতে চায়। তবে সরকারের নীতিনির্ধারক সূত্রগুলো বলছে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখনো লকডাউন রাখার পক্ষে। তারা মনে করছে, লকডাউন যত সীমিতই হোক না কেন, লকডাউন কিছু মানুষ অগ্রাহ্য করুক না কেন; তারপরও লকডাউনের একটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে। যদি লকডাউন না থাকতো তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতো।
এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢিলেঢালা হলেও এই লকডাউন থাকা দরকার। তবে সরকার শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নেবে তা জানা যাবে কাল বা পরশুর মধ্যেই।