কানাডার ৪৪তম পার্লামেন্ট নির্বাচনে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা মহামারির এই সময়কে গুরুত্ব দিয়ে নির্ধারিত সময়ের দু’বছর আগেই শুরু হয়েছে আগাম ভোট। ভোটে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টির সঙ্গে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির লড়াই চলছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বিবিসিকে বলেছেন, করোনার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে আগামী দিনের পদক্ষেপ কী হবে তা বেছে নিতে দেশের মানুষের জন্য এই ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও টিকা সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ৪৪তম সাধারণ নির্বাচনে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নাও পেতে পারেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। এককভাবে সরকার গঠনে কোনো দলকে কমপক্ষে ১৭০টি আসনে জয় লাভ করতে হবে।
এবার ক্ষমতা ফেরার পথ ধরেই এগোচ্ছিলেন ট্রুডো। কিন্তু করোনা আবহে সব হিসেব-নিকেশ পাল্টে যায়। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত আসন না থাকার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ভরসা করতে হয়েছে ট্রুডোকে। এমনকী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে ট্রুডো প্রশাসন।
গত মাসে কানাডায় হওয়া জনমত সমীক্ষায়, প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেকটাই এগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। প্রায় দুবছর আগে তিনি কানাডায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সূচনা করেছিলেন। ভোট প্রচারে দেশের আম জনতার উদ্দেশে তিনি জানিয়েছিলেন, করোনা মোকাবিলায় তার লেফট অব সেন্টার লিবারেল সরকার যেভাবে কাজ করেছে, ভোট দেওয়ার সময় জনগণ সেই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
কিন্তু ফলের প্রাথমিক আভাসে দেখা যাচ্ছে, বড় ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিতে তিনি ব্যর্থ, যা ট্রুডোর পক্ষে যথেষ্ট হতাশার কারণ হতে দাঁড়াতে পারে। লিবারেল কুশলীদের মতে কানাডার হাউস অব কমন্সের ৩৩৮টি আসনের মধ্যে অধিকাংশই জেতা কঠিন হতে পারে। ৩৩৮ আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই হাজার ১০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দলের প্রার্থী এক হাজার ৯১৯ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯১ জন।
সাম্প্রতিককালে করোনা মহামারির সময়ে জনগণের যাবতীয় চাহিদা মেটানো থেকে শুরু করে সকলকে করোনা টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে, ঋণের বিপুল বোঝা চাপে ট্রুডো সরকারের ওপর। মহামারির প্রকোপ কমাতে টিকাকরণের ওপর জোর দেন ৫০ বছর বয়সী কানাডার প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে দেশের রক্ষণশীল দলের নেতা এরিন ওটুলের সঙ্গে মতবিরোধ হয় ট্রুডোর। ওটুল রেপিড করোনা পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন।
জয়নিউজ/পিডি