আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ইডেন কলেজের নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক জীবনে তিনি চারবার প্রধানমন্ত্রী এবং তিনবার জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাপশি তিনি ৪১ বছর ধরে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন। তার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশন এবং উন্নয়নশীল ও নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের পথে।
দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় শেখ হাসিনাকে বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। বোমা, গুলি, গ্রেনেড তাকে বার বার তাড়িত করেছে। কারাভোগও করতে হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শেখ হাসিনাকে কখনও সামরিক স্বৈরশাসন, কখনও সাম্প্রদায়িকতা আবার কখনও সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে,যা এখনও অব্যাহত আছে। পাশাপাশি দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে এবারও তিনি জাতিসংঘে পুরস্কৃত হয়েছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জীবনের দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই জেলখানায় বাবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের সময় অনেক রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সার্বিক খোঁজ-খবর বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন দলের নেতাদের কাছে। এভাবেই শুরু হয় তার রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে ৬ দফা ও পরে১১দফা আন্দোলন এবং ৬৯এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারেহত্যা করে। তখন শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নির্বাসিত অবস্থায়ই শেখ হাসিনার ওপর দায়িত্ব আসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের। তার সফল দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই আওয়ামী লীগ চার চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছে। বর্তমানে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে এবং তিনিও টানা তিনবারসহ মোট চারবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতক চক্রের হাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা বেলজিয়াম অবস্থান করছিলেন। এরপর সেখান থেকে তিনি জার্মানি আসেন। পরে জার্মানি থেকে ভারতে এসে নির্বাসিত জীবনযাপন করতে থাকেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি ভারত থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার আরেক চ্যালেঞ্জিং জীবন। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে তাকে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে।
রাজনৈতিক কর্মব্যস্ত জীবনের মধ্যেও তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম ইত্যাদি।
এ বছর জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। জাতিসংঘের বার্ষিক সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। আওয়ামী লীগও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনগুলো নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন করছে।
জয়নিউজ/পিডি