রোহিঙ্গা ও আটকে পড়া পাকিস্তানিদের বাংলাদেশের জন্য বোঝা হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান জিরার্ডভ্যান লিউয়েনের সঙ্গে আলাপের সময় এ প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
নবনিযুক্ত ডাচ রাষ্ট্রদূত আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ডাচ রাষ্ট্রদূতকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ও পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর ইতোমধ্যেই তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তারা আমাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে পরিবেশ ও বন সম্পদ ধ্বংস করছে।
নেদারল্যান্ডসের দূত রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বাস্তু ও এনজিও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কাছে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়াতেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গাদের ঢল বাংলাদেশের সীমান্তে আসতে শুরু করেছিল ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট। এর চার বছর হয়েছে চলতি বছরের আগস্টে। সে সময় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
মিয়ানমারে অং সান সু চি’র সরকারের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ চুক্তি সই করেছিল। কিন্তু কিন্তু লাখো রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় আশ্রয় নেওয়ার পর চার বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সেনাশাসন আসার পর দেশটির সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় এগার লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১৬৪৫ জনের প্রথম একটি দলকে ভাসানচরে নির্মিত আশ্রয় শিবিরে নেওয়া হয় গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। সরকারের লক্ষ্য মোট এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া। কিন্তু জাতিসংঘসহ নানা সংস্থা শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছিল। দীর্ঘসময় বিরোধিতা করে এলেও গেল অক্টোবরে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় যুক্ত হয় জাতিসংঘ।