ট্রেনের টিকিট কম্পিউটারাইজড ও অনলাইন হওয়ার পর ২০০৭ সালে রেলের টিকিট বিক্রির কাজ পায় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) নামে একটি প্রতিষ্ঠান। একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়ে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর এ দায়িত্বে থেকে প্রতিষ্ঠানটি। এবার সেই দায়িত্ব তাদের হাত থেকে সরে গেল। এখন থেকে ট্রেনের বিক্রি করবে সহজ। চুক্তি অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরের জন্য এ কাজ পেয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম (বিআরআইটিএস) ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, সাপ্লাই, ইনস্টল, কমিশন, অপারেট, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী আর সহজ-এর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মালিহা এম কাদির।
চুক্তি অনুযায়ী প্রতিটি টিকিটের জন্য সহজ লিমিটেডকে ২৫ পয়সা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। যেখানে সিএনএসকে দিতে হতো প্রায় তিন টাকা। আগামী ২১ দিনের মধ্যে কাজ বুঝে নেবে সহজ। আগামী ১৮ মাস তারা আগের সার্ভারে কাজ চালিয়ে যাবে। এরপর প্রয়োজন হলে টিকেটিং সিস্টেমে পরিবর্তন আনবে এবং নিজস্ব সার্ভারে কাজ করবে। সিএনএস এতদিন রেলওয়ের নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করত।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘যেটা নিয়ে আমরা সবচেয়ে বড় প্রশ্নের সম্মুখীন হই এবং রেলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে—টিকিটিং ব্যবস্থা নিয়ে। এই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য আমরা আগেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু অনেক বাধা অতিক্রম করে আজকের এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি। চুক্তির মাধ্যমে সেই নতুন যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৭ সালে সিএনএসের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল রেলের। তারপর থেকে মেয়াদ বাড়িয়ে মামলা-মোকদ্দমা করে এই পর্যায়ে এসেছে। আমার আমলেও চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি আমার কাছেও আসে। আমি সেটাকে সমর্থন না করে নতুন টেন্ডার করতে বলি। দরপত্রে সিএনএসও আবেদন করেছিল। কিন্তু তারা ১ টাকা ৪০ পয়সা সার্ভিস চার্জ চেয়েছিল। আর সহজ ২৫ পয়সার কথা বলেছিল। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ২০১৯ সালে কাজ পায় কাজ পায় সহজ। এরপর সিএনএস হাইকোর্টে মামলা করে। এতদিন পরে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ফলে আমাদের চুক্তি করতে আর কোনো বাধা ছিল না। কিন্তু আমাদের সার্ভিস চালু রাখতে এতদিন সিএনএসকে দেওয়া ছিল। অনেকটা বাধ্য হয়ে দিয়েছি। আমরা আশা করছি, মানুষের আর অনলাইনে টিকিট কাটতে ভোগান্তি হবে না।’
সহজের এমডি মালিহা এম কাদির বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে বাসের অনলাইন টিকেটিং নিয়ে আমরা কাজ করে আসছি। অনলাইনে টিকিট বিক্রি আমাদের মজ্জাগত বিষয়। মানুষকে আমরা যাতে ভালো সেবা দিতে পারি এই লক্ষ্যে কাজটি নিয়েছি।’
এ দিকে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারসহ রেলওয়ে ও সহজের কর্মকর্তারা।