ভুল চিকিৎসায় নিহত রাফিদা খান রাইফার পরিবারকে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান বলেছেন, আমার সন্তান হত্যার মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আমি তদন্ত কমিটির কাছে জানিয়েছি। আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
শিশুকন্যার মৃত্যুর ন্যায়বিচার চেয়ে রুবেল খান বলেন, আমার মেয়ে ‘মেডিকেল মার্ডারের’ শিকার। আমি এই হত্যার বিচার চাই। দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সকাল ১০টায় তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য উপস্থাপন করতে সার্কিট হাউসে আসেন রুবেল খান ও ম্যাক্স হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. লিয়াকত আলীসহ অভিযুক্ত চিকিৎসকরা।
রাইফার বাবা রুবেল খানের সঙ্গে কথা বলার পর ম্যাক্স হাসপাতালের অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। বেলা পৌনে ১টার দিকে সার্কিট হাউস থেকে বের হয়ে মেহেদীবাগে ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শনে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
ম্যাক্সে যাওয়ার আগে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল্লাহিল আজম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। এখন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি। তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে, শিগগির রিপোর্ট দেওয়া হবে।
রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। কমিটির আহ্বায়ক হলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইফুল্লাহিল আজম। কমিটিতে বিএমডিসির একজন প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২৯ জুন রাতে মাত্র দুই বছর চার মাস বয়সেই মৃত্যুবরণ করে রাইফা। অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ফুটফুটে এই শিশুর মৃত্যুতে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় চকবাজার থানায় ১৮ জুলাই এজাহার দায়ের করেন রাইফার বাবা রুবেল খান। দু’দিন পর সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে চকবাজার থানা পুলিশ।
এই মামলায় ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্র দেব ও বেসরকারি ম্যাক্স হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খানকে আসামি করা হয়।