বাংলাদেশের রাজনীতি মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক। সেই রাজধানীর হৃদপিণ্ড রমনা-মতিঝিল। নির্বাচনি আসন হিসেবে এর নাম ঢাকা-৮। ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি সংসদীয় আসন আছে এর মধ্যে আসনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ আসনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় এবং দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে অবস্থিত। ফলে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিবেচনায় রাজনীতির মাঠে এই আসনের গুরুত্ব অনেক। সেই আসনের নির্বাচনি খবর জানতে আজ পড়ুন জয়নিউজের ঢাকা প্রতিনিধি অভিজিত বণিক’র বিশেষ প্রতিবেদন
চলতি নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ঘোষিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনি তফসিল। নির্বাচন কমিশনে চলছে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। যদিও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য হঠাৎ করেই সংলাপের আয়োজন করেছেন। ধাপে ধাপে ক্ষমতাসীন দল তাদের জোট সঙ্গীদের নিয়ে সংলাপ করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে প্রার্থী বাছাই থেকে সব ধরণনর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট।
সারাদেশের মতো ঢাকা-৮ আসনেও বইছে নির্বাচনি হাওয়া। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন। এর মধ্যে জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি এবারও মনোনয়ন চান। তাঁর আয়োজনে বিভিন্ন এলাকায় চলছে ডিজিটাল প্রচারণা। এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাঈল হোসেন সম্রাট, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাহালুল মজনুন চুন্নু ও বাহাদুর বেপারি। তবে তাদের প্রচারণা খুব একটা নেই।
এদিকে সাত দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে থাকা বিএনপি এবারও নির্বাচনে অংশ নিবে কি-না এটা নিশ্চিত না। তবে নির্বাচন করলে এ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিএনপির প্রার্থী হবেন এটা একপ্রকার নিশ্চিত। যদিও মীর্জা আব্বাস নিজের বিকল্প হিসেবে তাঁর আপন ভোট ভাই ও স্ত্রীকে মাঠে নামিয়ে রেখেছেন বেশ কয়েক মাস আগেই। পোস্টার, ব্যানার টাঙ্গিয়ে তাঁরা অবস্থান জানান দিচ্ছেন। এছাড়া ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলও মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করতে চান। মীর্জা আব্বাস নির্বাচন করলে তিনি মনোনয়ন চাইবেন না বলে জানা গেছে।
আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে। তিনি জয়নিউজকে বলেন, আমি বিগত পাঁচ বছরে যে উন্নয়ন এই আসনে করেছি, তা স্বাধীনতার পর কেউ দেখেনি। এলাকার উন্নয়নে সবসময় ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
তিনি আরো বলেন, এবারও মনোনয়ন চাইবো। আমি আশাবাদী। এজন্য এলাকায় নিয়মিত যাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আগে ৭ দফা, এরপর নির্বাচন। এছাড়া অন্য কোনো ভাবনা নেই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আপনি নির্বাচন করবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে। ৭ দফা দাবি মেনে নিলে আমরা নির্বাচনে আসবো এবং আমি নির্বাচন করবো।