তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সম্প্রতি মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা অ্যালান ইউজিন মিলার। তবে আদালতের মৃত্যুদণ্ডের আদের কার্যকর করতে গিয়ে ধাক্কা খেলেন কারা কর্তৃপক্ষ। কেননা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে অপরাধীর শরীরে প্রয়োগ করা বিষাক্ত ইনজেকশন কাজ করেনি।
তবে অ্যালানকে মৃত্যুদণ্ড দিতে যে উপায় বের করা হয়েছে, সেই পদ্ধতি এর আগে কখনও কোনো মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপকের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি।
তিনটি খুনের অভিযোগ সম্প্রতি অ্যালানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। পরে সেখানকার কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অ্যালানকে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। কিন্তু সেই বিষ অ্যালানের শরীরে প্রবেশ করলেও তার মৃত্যু হয়নি। এমনিতেই অ্যালানের স্থুল শরীরে শিরা খুঁজে বের করতে বেশ নাকাল হতে হয়েছিল জেল কর্মকর্তাদের। অনেক কষ্টে শিরা খুঁজে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রবেশ করিয়ে কর্মকর্তারা অ্যালানের মৃত্যুর অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেই বিষ তার শরীরে প্রবেশ করতেই যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন অ্যালান। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করার সময় শরীরে আরও দু’টি সুচ প্রবেশ করানো হয়। এর মধ্যে একটিতে শরীর অবশ করার ওষুধ থাকে এবং অন্যটিতে সংজ্ঞাহীন করার ওষুধ থাকে।
যন্ত্রণাহীন মৃত্যু নিশ্চিত করতে এই দু’টি ইনজেকশন অপরাধীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়। অ্যালানের শরীরেও প্রয়োগ করা হয় এই দুই ওষুধ। কিন্তু তার শরীরে ওষুধ দু’টি কাজ না করায় বিষের প্রভাবে তার শরীরে প্রচণ্ড জ্বালা শুরু হয়। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন অ্যালান। সঙ্গে সঙ্গে অ্যালানের শরীর থেকে ওই ইনজেকশনের সুচগুলো খুলে নেন সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা।
অ্যালানের আইনজীবীর অভিযোগ, ইনজেকশন প্রয়োগের কারণে অ্যালান প্রচণ্ড মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণা অনুভব করেছেন। আর তাই কোনোভাবেই আর ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। অনেক দেশেই বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরে গত সোমবার আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যালানকে আর বিষ প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। এরপরই বিষাক্ত ইনজেকশনের পরিবর্তে নতুন উপায়ে অ্যালানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেল কর্মকর্তারা। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যালানকে মৃত্যুর সাজা দিতে বিষাক্ত নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া গ্যাস প্রয়োগ করা হবে।
এ বিষয়ে অ্যালাবামার বাসিন্দাদের দাবি, বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার থেকে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অনেক মানবিক।
জেএন/এমআর