আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের মানুষের উন্নয়ন হয় বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বর্তমান সরকারের নানাবিধ উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) যুব মহিলা লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাজনীতি থেকে প্রশাসন সবক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কাজ করছে সরকার।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলাই বিএনপির চরিত্র। হাওয়া ভবন খুলে লুটপাট করতে পারে তারা, বিএনপি লুটপাট ছাড়া দেশকে কিছুই দিতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, তাদের আন্দোলন মানেই মানুষ পুড়িয়ে মারা, বিএনপির আন্দোলন মানেই অগ্নিসন্ত্রাস।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের দুঃশাসনের সময় যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। তাদের শাসনামলে নারীদের ওপর জুলুম-অত্যাচার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যুব মহিলা লীগের সবাইকে অভিনন্দন জানাই যে, ওই চরম অত্যাচারের সময়েও পুলিশ ও বিএনপির গুণ্ডা বাহিনীর নির্যাতনের মুখেও তারা টিকে ছিল। সেই দিক থেকে আমরা কিন্তু বিএনপির ওপর কোনো প্রতিশোধ নেয়নি। কারণ আমরা দেশের উন্নয়নে মনোযোগী। ওদের শাসন মানেই নির্যাতন-হত্যা-অত্যাচার।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই কেবল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়।
২০০৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেন নি, তুলতে পারেন নি। তিনশ আসনের মধ্যে বিএনপি কয়টি পেয়েছিল! মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল আর জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭ আসন। সে জন্যই খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতা হতে পেরেছিলেন।
এ সময় ব্যাংকে টাকা থাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজব ছড়াচ্ছে কেউ-কেউ! ব্যাংকে নাকি টাকা রাখা যাবে না, তারা আসলে চোরদের এজেন্ট কী না সেটা খোঁজ নিতে হবে। কেননা, তাদের গুজবে বিশ্বাস করে মানুষ টাকা তুলে ঘরে রাখছে। সেটা আবার চোর চুরি করছে, কেউ গুজবে বিশ্বাস করবেন না।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিডের ধাক্কা না এলে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করতে পারতাম। এ বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ থামাতে পারবে না।
দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন থানা,ওয়ার্ড থেকে মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা সম্মেলনে উপস্থিত হন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সম্মেলন পরিচালনা করছেন।
২০০২ সালের ৬ জুলাই যুব মহিলা লীগ গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে ১০১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটিতে বর্তমান সভাপতি নাজমা আক্তার আহ্বায়ক ছিলেন। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সে কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
যুব মহিলা লীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। সে সম্মেলনে নাজমা আক্তার সভাপতি ও অপু উকিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিন বছর পর পর সম্মেলনের কথা থাকলেও ১৩ বছর পর সংগঠনের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ। ওই সম্মেলনে নাজমা আক্তার ও অপু উকিল পুনর্নিবাচিত হন।
জেএন/এমআর