আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের দুই রাত সংঘর্ষের পর পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে বিবদমান গ্রুপগুলো। শনিবার (৩ নভেম্বর) ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে দুইটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে হাটহাজারী মডেল থানায়।
পাল্টাপাল্টি মামলার বিষয়টি জয়নিউকে নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী থানার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম শেখ।
৩১ অক্টোবর (বুধবার) রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় চবি ছাত্রলীগের উপ গ্রুপ ভিএক্স এবং চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)। এরমধ্যে সিএফসি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে ভিএক্স পরিচিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে। এসময় মেয়র নাছিরের অনুসারী অন্য গ্রুপ সিক্সটি নাইন, একাকার ও কনকর্ডও ভিএক্সের পক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরে বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) রাতেও সংঘর্ষে জড়ায় গ্রুপগুলো। রাতভর থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ধারালো অস্ত্রের মহড়া চলে। পরদিন শুক্রবার (২ নভেম্বর) তারা মহড়া, উস্কানিমূলক স্লোগান এবং হলে সশস্ত্র অবস্থান নেয় বলে জানা যায়। শনিবার (৩ নভেম্বর) পাল্টাপাল্টি হত্যাচেষ্টার মামলা করে সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের কর্মীরা।
হাটহাজারী থানা সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকাল ৫টার দিকে সিএফসি গ্রুপের কর্মী আল আমিন ভূঁইয়া বাদি হয়ে বিপক্ষ সিক্সটি নাইন ও ভিএক্স গ্রুপের ৮ কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। এর পাঁচ ঘন্টার মাথায় রাত ১০টার দিকে একই থানায় অজ্ঞাত ৪ জনসহ সিএফসি গ্রুপের ১৫ কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী আবু হেনা রনি।
উভয় মামলায় ধারালো দা, হকিস্টিক,লাঠির আঘাতসহ কিল, ঘুষি ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা এবং টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে।
মামলার নথিপত্রে দেখা যায়, পূর্বের মামলার বাদি পরবর্তী মামলার দ্বিতীয় আসামি। ওই মামলার দুইজন সাক্ষিকেও নতুন মামলায় আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- ইমরান হোসেন এবং প্রান্ত মল্লিক। অন্যদিকে শফিকুল ইসলাম শাওন এবং ফোরকানুল আলম নামের পরবর্তী মামলার দুইজন সাক্ষিও প্রথম মামলায় আসামি।
সিক্সটিনাইন পক্ষের মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান, কনক সরকার, পিয়াস সরকার, মির্জা খবির সাদাফ, আরিফুল ইসলাম আরিফ, সন্দ্বীপ বিশ্বাস, মোহন খান এবং অলিউল্লাহ অলি। এছাড়াও অজ্ঞাত চারজনকেও আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
অপরদিকে সিএফসি পক্ষের মামলার অন্য আসামিরা হলেন আনোয়ার হোসেন, শ্রাবণ মিজান, মিজান সাইক, সাঈদ করিম মুগ্ধ, শাহিব তানিম এবং আল আমিন শান্ত।
এ বিষয়ে সিএফসি পক্ষের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি জামান নূর জয়নিউজকে বলেন, তারা আমাদের নিরীহ ছেলেদের উপর হামলা করেছে। প্রশাসনসহ সবাই এ বিষয়ে অবগত আছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আবার তারা আইনের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা ধোপে টিকবে না।
অন্যদিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও একই কমিটির আরেক সহ-সভাপতি মনসুর আলম জয়নিউজকে বলেন, সংঘর্ষের সময় আমাদের কর্মীও আহত হয়েছে। তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
জয়নিউজ/নবাব/আরসি