আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন ভন্ডুল করতে বিএনপি আবার জামাতকে দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের বার্তা দিচ্ছে। কিন্তু সেটি তাদেরকে আমরা করতে দিতে পারি না, করতে দেওয়া হবে না।’
রোববার বিকেলে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ ঘোষণা দেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘শনিবার ঢাকায় জামায়াতে ইসলামী সমাবেশ করে আগামী নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি তাদেরকে দিয়ে এই ঘোষণা দিয়েছে। এর অর্থ, তারা আবার অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য শুরু করবে, সেই ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছে।’
‘বিএনপি-জামাত দেশে আবার বিশৃঙ্খলা করে বিশেষ একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় এবং সেটা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জানে এই নির্বাচনে তাদের সম্ভাবনা নাই। সেটি জেনেই তারা নির্বাচন ভন্ডুল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু সেটি তাদেরকে করতে দেওয়া হবে না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন কর্মী এবং সভাপতির দেওয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালনরত হিসেবে আমি বলতে চাই- যারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে বিএনপির ইন্ধন ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘দশ বছর পরে সমাবেশ করে যারা এতো আস্ফালন করেছে, তারাই বায়তুল মুকাররমে পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দিয়েছে, এরাই বিশ্ব ইজতেমা ফেরত মুসল্লিকে আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে, এরাই সমগ্র বাংলাদেশে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে পুড়িয়েছে, পাঁচশ’ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, স্কুল ফেরত বালকের ওপর হামলা চালিয়েছে, বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। সুতরাং এদেরকে আবার মাঠ দখল করতে দেওয়া হবে না। এজন্য আওয়ামী লীগের ঐক্য সংহতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সেইসাথে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগকে হারানোর শক্তি এ দেশে কারো নাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনেও ধস নামানো বিজয় অর্জন করবো এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা পঞ্চমবারের মতো এবং পরপর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন ইনশাআল্লাহ।’
‘উত্তরবঙ্গের কোনো কোনো জায়গায় জামায়াতে ইসলামীর ছোট ছোট ঘাঁটি আছে, বিএনপিও ঘাপটি মেরে বসে আছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের বাড়িও উত্তরবঙ্গেই ঠাকুরগাঁওয়ে। তিনি আজ যেভাবে আস্ফালন করছেন, যে ভাষায় কথা বলে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের আভাস দিচ্ছেন, তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে না, আমরা দিতে পারি না।’
নীলফামারীতে দলের এই বর্ধিত সভায় জেলা পর্যায়ে দলের সংহতি বৃদ্ধির ওপর গভীর গুরুত্ব আরোপ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জেলায় নিয়মিতভাবে বর্ধিত সভা, সময়ে সময়ে সাধারণ সভা এবং ওয়ার্কিং কমিটির সভা আয়োজন করা জরুরি। এতে সংগঠনের বন্ধন আরো দৃঢ় হয়, সংগঠন আরো শক্তিশালী হয়। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. মমতাজুল হকের সঞ্চালনায় সভাটি উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রধান বক্তা এবং দলের কেন্দ্রীয় সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও এড. সফুরা বেগম রুমি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
জেএন/এমআর