অশ্রুচোখে কিংবদন্তীর জীবন দেখা

১৫ আগস্ট ১৯৭৫, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে নৃশংসতম অধ্যায়। দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সপরিবারে হত্যার পর তাঁর জীবিত কন্যার ফেরারি জীবন। সেখান থেকে ফিনিক্স পাখির মতো তাঁর উত্থান। এমন সব আবেগসঞ্চারী ঘটনা নিয়ে নির্মিত ডকুড্রামা ‘হাসিনা : অ্যা ডটার্স টেল’এর পর্দা উঠেছে।

- Advertisement -

৭০ মিনিটের এই প্রামাণ্যচিত্র শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রামের চারটি বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর কাজ করে এটি নির্মাণ করেছেন রেজাউর রহমান খান পিপলু।

- Advertisement -google news follower

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের বিষাদ, বিজয় আর নৈকট্যের এক অসাধারণ গল্প প্রামাণ্যচিত্রে তুলে এনেছেন নির্মাতা। যার পরতে পরতে ছিল হাসি, কান্না আর সংগ্রামের এক অভূতপূর্ব ইতিহাস।

‘হাসিনা: অ্যা ডটার্স টেল’ছবিতে আরো উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বের বাইরে একজন ব্যক্তি শেখ হাসিনার জীবনালেখ্য। প্রামাণ্যচিত্রে তাঁকে দেখা গেছে কখনও মেয়ে, কখনও স্নেহময়ী মা, কখনও মমতাময়ী বোন, আবার কখনওবা রাজনীতির চড়াই উৎরাই পেরোনো লড়াই সংগ্রামের এক লৌহমানবীরুপে।

- Advertisement -islamibank

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দুই বোন শেখ হাসিনা আর শেখ রেহেনার ফেরারি জীবনের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে নির্মাতা দৃশ্যধারণ করেছেন বিদেশেও।

এখানে শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, উঠে এসেছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কথাও। নিজের ঘরে বই পড়ে আর গান শুনে অলস সময় কাঁটানো শেখ হাসিনা আজ সফল রাষ্ট্রনায়ক। সেই শেখ হাসিনাকে নিয়ে শেখ রেহানা প্রামাণ্যচিত্রে তাঁর জবানিতে বলেন, “আমার খুব করে মন চায়, আজ মাকে যদি বলতে পারতাম তোমার হাসু আর আলসেখানায় থাকে না। বনানী কবরস্থানে গিয়ে ভাবি, যদি তাঁকে এখনও চিঠি লিখতে পারতাম!” শেখ রেহানার জবানিতে উঠে এসেছে একুশে আগস্টের নির্মম বর্বরতার কথাও।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর আর টুঙ্গীপাড়া বারবার ঘুরেফিরে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। উঠে এসেছে টুঙ্গীপাড়ায় জিয়ল গাছের শিকড় ধরে পানিতে লাফ দেয়া ছোটবেলার হাসিনার দুরন্ত শৈশব। সেই স্মৃতিজড়ানো টুঙ্গিপাড়াতেই অবসরের পরের সময়টা কাটাতে চান তিনি।

কিছু না জানা তথ্যও উঠে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। এই যেমন, ৩০ বছরের ব্যবধানে একই তারিখে (৯ এপ্রিল) বাবা ও মেয়ের ভারতের নিজামউদ্দিন আউলিয়ার (র.) মাজার জেয়ারত। এছাড়া তাদের ‘তালুকদার’ ছদ্মনাম। পরিচয় লুকিয়ে ভারতে অবস্থানকালীন সময়ে তাদের নিতে হয়েছিল এই তালুকদার ছদ্মনাম। এই প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো জাতির কাছে তাদের ‘তালুকদার’ ছদ্মনামের কথা বলেছেন রেহেনা। দুঃখ করে তিনি বলেন, পরিবার হারালাম, দেশ ছাড়লাম, নামটাও বদলে ফেলতে হল!

প্রামাণ্যচিত্রটি দেখার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী অশ্রুস্নাত কণ্ঠে জয়নিউজকে বলেন, এই ছবিটি এককথায় হৃদয়বিদারক। মুক্তিযুদ্ধ আর দেশপ্রেম বুঝতে এই ছবি অবশ্যই দেখতে হবে। বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে শেখ পরিবারের কাছে চিরঋণী হয়ে থাকবে। এটি গ্রামগঞ্জের মানুষকেও দেখাতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও তরুণের এটি অবশ্যই দেখা উচিত।

ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্দেশক এবং সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র। সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর পক্ষে ডকুড্রামাটি প্রযোজনা করেছেন রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও নসরুল হামিদ বিপু। চিত্রগ্রহণ করেছেন সাদিক আহমেদ। সম্পাদনায় ছিলেন নবনীতা সেন।

জয়নিউজ/জুলফিকার

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM