সম্প্রতি আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া দলটাই কিনা সিরিজ জিতে নিল দুইবারের টি-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে। আর তাই বোধহয় ক্রিকেটকে বলা হয় ‘অনিশ্চিত গৌরবের খেলা’।
সেই গৌরবের সাক্ষি আমেরিকায় বিজয় পতাকা উড়ালো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানের জয় পেয়েছে টাইগাররা। এর মধ্য দিয়ে ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টিতেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো সাকিববাহিনী। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পরপর দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয় পেল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এটি মাত্র দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। আগের সিরিজ জয়টি ছিল ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডে।
ফ্লোরিডার লডারহিলে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ২০ ওভারে করেছিল ১৮৪ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭.১ ওভারে ১৩৫ রান তোলার পর খেলা শেষ হয় বৃষ্টিতে। আর বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ তখন ১৯ রানে এগিয়ে ছিল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ফ্লেচার-রাসেলদের সামনে ১৮৫ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম-লিটনের ভালো শুরু এবং শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহর দৃঢ়তায় ৫ উইকেটে ১৮৪ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে ৩২ বলে ৬১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন লিটন দাস, যা সাজানো ছিল ৩টি ছয় ও ৬টি চারের সাহায্যে। আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ১৩ বলে ২১ রান। শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহর অপরাজিত ২০ বলে ৩২ এবং আরিফুলের ১৬ বলে ১৮ রানের সুবাদে ১৮৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট হারায়। ওই ওভারের পঞ্চম বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচারকে সীমানায় নাজমুলের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান পেসার মুস্তাফিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ তখন ২৬। আরেক ওপেনার ওয়ালটন ১৯ রানে ফিরে যান সৌম্য সরকারের বলে। এরপর নিজের প্রথম ওভারে এসেই উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে মারলন স্যামুয়েলকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি। এরপর আর রানরেটের সাথে তাল মিলিয়ে পেরে উঠেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শেষদিকে রাসেলের ৪৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস বাংলাদেশি দর্শকদের মনে শংকা জাগালেও মুস্তাফিজ সেই শংকা দূর করেন রাসেলকে বাউন্ডারিতে আরিফুলের ক্যাচ বানিয়ে।
রাসেল আউট হওয়ার পরপরই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের তখন প্রয়োজন ১৭ বলে ৫০ রান। তবে পরে আর খেলা শুরু করা সম্ভব না হওয়ায় ডিএলএস মেথডে বাংলদেশকে ১৯ রানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৪/৫ (লিটন ৬১, তামিম ২১, সৌম্য ৫, মুশফিক ১২, সাকিব ২৪, মাহমুদউল্লাহ ৩২*, আরিফুল ১৮*; বদ্রি ০/২৩, নার্স ০/৩১, রাসেল ০/৩৬, ব্র্যাথওয়েট ২/৩২, পল ২/২৬, উইলিয়ামস ১/৩২)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭.১ ওভারে ১৩৫/৭ (ওয়ালটন ১৯, ফ্লেচার ৬, স্যামুয়েলস ২, পাওয়েল ২৩, রামদিন ২১, রাসেল ৪৭, ব্র্যাথওয়েট ৫, নার্স ০*; আবু হায়দার ১/২৭, রুবেল ১/২৮, মুস্তাফিজ ৩/৩১, নাজমুল ০/২, সৌম্য ১/১৮, সাকিব ১/২২)
ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইসে বাংলাদেশ ১৯ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: লিটন দাস
ম্যান অব দা সিরিজ: সাকিব আল হাসান