চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এ উপলক্ষে বুধবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইবিআরসি প্যারেড গ্রাউন্ডে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ ও বিমানবাহিনীর এয়ার অফিসার কমান্ডিং এয়ার কমোডর মো. মফিদুল রহমানের উপস্থিতিতে কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, সাবিহা নাহার মুসা এমপি, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন, কাস্টম কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, চেম্বার পরিচালক ও জয়নিউজের সম্পাদক অহীদ সিরাজ চৌধুরীসহ উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, চট্টগ্রাম অঞ্চলের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি অনাড়ম্বর এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের স্থির ও ভিডিওচিত্র প্রদর্শন ও তিন বাহিনীর বাদক দলের সমন্বিত যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করা হয়।
এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান ও তাদের হাতে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান সশস্ত্র বাহিনীর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সামগ্রিক উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আওতায় বাহিনীসমূহের জনবল বৃদ্ধি, কমান্ড সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযুক্তি, উন্নত আবাসন ব্যবস্থাসহ বিবিধ উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নতুন ইউনিট, ব্রিগেড ও ডিভিশন প্রতিষ্ঠাসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযুক্ত করা হয়েছে। যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর দেশের প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরার পাশাপাশি দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আলোকে নৌবাহিনীর উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে নৌ কমান্ড সম্প্রাসারণ জনবল বৃদ্ধি, নৌ ঘাঁটি স্থাপন,পুরাতন জাহাজ প্রতিস্থাপন ও নতুন জাহাজ সংযোজনসহ বিবিধ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় নৌবহরে যুক্ত হয়েছে আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত উন্নতমানের বেশ কিছু যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার এবং মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট।
তিনি যোগ করেন, গণচীনে নির্মিত বানৌজা নবযাত্রা ও জয়যাত্রা নামে ২টি সাবমেরিন ইতোমধ্যে নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে। যার মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে আন্ডার ওয়াটার যুদ্ধের সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি হয়েছে। এছাড়াও শীঘ্রই আমাদের নৌবহরে সংযোজিত হবে অত্যাধুনিক আরো ৪টি যুদ্ধজাহাজ। এর পাশাপাশি নৌবহরে সংযোজিত হতে যাচ্ছে ২টি মেরিটাইম পেট্টোল এয়াক্রাফট । এছাড়া ২টি অত্যাধুনিক এনটি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার হেলিকপ্টার ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।