ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব সুলাওয়েসি রাজ্যের কেন্দারি থেকে রাজধানী জাকার্তা যাওয়ার সময় মাঝ আকাশেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বাটিক এয়ারের একটি ফ্লাইটের দুই পাইলট। তারা দু’জনই ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক।
গত ২৫ জানুয়ারি দক্ষিণপূর্ব সুলাওয়েসি থেকে রাজধানী জাকার্তায় যাচ্ছিল বিমানটি। ওই সময় এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের বিমানটিতে ১৫৩ জন যাত্রী ছিলেন।
বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এম ক্রিস্টি এনদাহ মুরনিকে উদ্ধৃত করে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনতারা এ তথ্য জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পরিবহণ নিরাপত্তা কমিটি (কেএনকেটি) প্রাথমিক তদন্তে খুঁজে পেয়েছে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় বিমানের পাইলটরা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি কমিটির (কেএনকেটি) প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৫ জানুয়ারি উড়োজাহাজটির পাইলট এবং কো পাইলট দুজনই ফ্লাইট চলাকালীন প্রায় ২৮ মিনিট ঘুমিয়ে থাকেন। এর ফলে উড়োজাহাজটি তার নির্দিষ্ট যাত্রাপথে থাকতে ব্যর্থ হয়।
অবশ্য এ ঘটনায় ফ্লাইটের চার ক্রু ও ১৫৩ যাত্রীর কেউই আহত হননি। উড়োজাহাজেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। বাটিক এয়ারের ফ্লাইট বিটিকে ৬৭২৩ প্রায় দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট উড়াল শেষে সফলভাবেই জাকার্তায় অবতরণ করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাস্ট অফিসার ক্যাপ্টেনকে ফ্লাইটের আগে জানিয়েছিলেন তিনি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না করেই ফ্লাইটে এসেছেন। কেন্দারি থেকে ফ্লাইটটি আকাশে ওড়ার পর ফাস্ট অফিসার ৩০মিনিটের জন্য ঘুমান।
পরে নির্দিষ্ট উচ্চতায় যাওয়ার পর ক্যাপ্টেন ফ্লাইট অফিসারকে উড়োজাহাজের দায়িত্ব দিয়ে বিশ্রাম নেন। ৯০মিনিট ওড়ার পর ফাস্ট অফিসার অসচেতনভাবে ঘুমিয়ে পড়েন।
এ সময় জাকার্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ প্রায় ১২মিনিট উড়োজাহাজটির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সবশেষ যোগাযোগের প্রায় ২৮ মিনিট পর ফ্লাইট ক্যাপ্টেনের ঘুম ভাঙে এবং তিনি বুঝতে পারেন যে এটি তার নির্দিষ্ট যাত্রাপথে নেই। এ পর্যায়ে তিনি ফাস্ট অফিসারকে ঘুম থেকে তোলেন এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফ্লাইট ক্যাপ্টেন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাছে দাবি করেন উড়োজাহাজটির রেডিও সিগন্যাল ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা গেছে। প্রতিবেদনে পাইলটদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে দুজনই ইন্দোনেশিয়ান। ক্যাপ্টেনের বয়স ৩২ আর ফাস্ট অফিসারের ২৮।
সেই ফাস্ট অফিসারের দুটি জমজ শিশু আছে এবং তাদের যত্ন নিতে স্ত্রীকে সহযোগীতার জন্য রাতে তাকে বেশ কয়েকবার ঘুম থেকে উঠতে হয়েছিল।
ফ্লাইট বিটিকে ৬৭২৩ এর সব ক্রুকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে।
জেএন/পিআর