কিশোর ক্রিকেটার খুনের ঘটনায় সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ৪ সহপাঠী গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী থেকে কিশোর ক্রিকেটার রাহাত খানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চার সহপাঠী বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের প্রথম বেঞ্চে বসা নিয়ে কিছু দিন আগে তার সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে সহপাঠী বন্ধুরা মিলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিয়েছে।

- Advertisement -

পুলিশ বলছে, শিশু রাহাত খানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা লিয়াকত আলী বাদী হয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় চার জন সহপাঠী বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে, সেগুলো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। তবে গ্রেফতারদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।

- Advertisement -google news follower

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন হামিদচর এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে কিশোর ক্রিকেটার রাহাত খানের লাশ ভেসে আসে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এদিকে, মেধাবী রাহাত খানের মৃত্যুতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না নিহতের স্বজন এবং এলাকার লোকজন।
বুধবার রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন এলাকায় বেশ কিছু লোকজন। এ সময় তারা রাহাতের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

- Advertisement -islamibank

নিহত রাহাত খান নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন পূর্ব ফরিদাপাড়া এলাকার লিয়াকত আলী ও রোজী আক্তার দম্পতির ছেলে। পরিবারে তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। সে চান্দগাঁও সানোয়ারা ইসলাম বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ছাড়া রাহাত চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন জুনিয়র ক্রিকেট দলের সদস্য ছিল। রাহাতের বাবার গ্রিলের একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে।

রাহাতের মা রোজী আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে খেলা পাগল। বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। আমার ছেলে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত স্কুলে পরীক্ষা দিয়েছিল। এরপর আধা ঘণ্টা টিফিন ছুটি ছিল। এরপর আবার দেড়টা পর্যন্ত ক্লাস। টিফিন ছুটিতেই তার কয়েকজন বন্ধু তাকে খেলার কথা বলে হামিদচর নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। আমার ছেলের খুনির ফাঁসি চাই।’

কেন হত্যা করেছে জানতে চাইলে রোজী আক্তার বলেন, ‘কিছু দিন আগে ক্লাসের প্রথম বেঞ্চে বসা নিয়ে স্কুলের এক ছাত্রের সঙ্গে ঝগড়া হয়। বিষয়টি ক্লাস টিচার জানতো। এ কারণেই আমার ছেলেকে খুন করেছে।’

সানোয়ারা ইসলাম বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল মনসুর চৌধুরী বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে স্কুলের একজন শিক্ষক ফোন করে আমাকে বলেন, হামিদচরের শাহাজী মাজার সড়কে স্কুলের এক ছাত্রের ব্যাগ, জুতা ও প্যান্ট পাওয়া গেছে। ব্যাগে থাকা বেতন রশিদ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ফোন করে। তখন আমার সহকর্মী বিষয়টি রাহাতের পরিবারকে জানালে রাহাতের পরিবার সেখানে গিয়ে জুতা, ব্যাগ নিয়ে আসেন।’

তিনি বলেন, ‘স্কুলের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্কুল ছুটির পর রাহাতকে তার এক সহপাঠী বন্ধুর সঙ্গে গেটের বাইরে আইসক্রিম খেতে দেখা গেছে। ওই বন্ধুকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চান্দগাঁও থানা পুলিশ নিয়ে গেছে। তার দেওয়া তথ্যে পুলিশ আরও তিন জনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তারা চার জন একই শ্রেণির হলেও ভিন্ন ভিন্ন সেকশনের।’

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘এ ঘটনা তদন্তে স্কুলের তিন শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেবেন।’

চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তানভীর আহমেদ বলেন, ‘শিশু রাহাত খানের হত্যায় জড়িত সন্দেহ তার চার সহপাঠী বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে। এসব তথ্য আমরা যাচাই-বাচাই করে দেখছি।’

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM