কালের আবর্তে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য মাটির ঘর এখন প্রায় বিলুপ্ত। গরমের দিনে আরামদায়ক হলেও বর্ষা মৌসুমে এই মাটির ঘর বড় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই দিন গড়ানোর পরিক্রমায় কমে যাচ্ছে মাটির ঘর। অথচ একসময় দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানরাও মাটির ঘর তৈরি করে বাস করতেন।
হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, অনেক ইউনিয়নেই মাটির ঘর প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকেই এ উপজেলায় মাটির ঘরের প্রচলন ছিল। জমি অথবা পুকুরের কাদা মাটি দিয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট চওড়া দেয়াল সৃষ্টি করে মাটির ঘর তৈরি করা হয়। প্রায় ১২ থেকে ১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা সুপারি ও বাঁশের ‘সিলিং’ তৈরি করে তার উপরে খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হয়। মাটির ঘর অনেক সময় দোতলাও হয়।
মেখল পুন্ডুরিক ধাম এলাকায় বড়দা চরণ সাধুর বাড়ির একটি দ্বিতল মাটির ঘরে বসবাসকারী প্রদীপ চৌধুরী ও ত্রিদীপ চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, একসময় মাটির ঘর ছিল ঘরমে ঠাণ্ডা ও শীতে গরম, যা বর্তমান যুগে বলা হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর। এখন সেই মাটির ঘরে বসবাস করতে চায় না বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েরা। তাই সেই মাটির ঘর ভেঙে এখন পাকা দালান নির্মাণ করছে সবাই।
জানা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাটির ঘর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে ইট-সিমেন্টের ঘর নির্মাণে বেশি উৎসাহী হচ্ছে মানুষ। এছাড়া গ্রামাঞ্চলের মানুষও আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন। যার ফলে পাকা বাড়ি নির্মাণের সংখ্যা বাড়ছে।
উপজেলা সদরের ফটিকা গ্রামের রনজিত জানান, মাটির ঘর শীত-গরম উভয় মৌসুমে বেশ আরামদায়ক। তবে বর্ষা মৌসুমে ক্ষতি হয় বেশি। বন্যা বা ভূমিকম্প না হলে একটি মাটির ঘর কয়েক যুগ টিকে থাকে।