সকাল ৮টার দিকে নগরের আউটার স্টেডিয়ামে রিকশা চালকদের জটলা দেখে সেখানে গেলাম। তাদের সবার মুখে হাসি। তাদের সারিবদ্ধ করে লাইনে দাঁড় করাচ্ছিলেন সবুজ টি-শার্ট পরা কিছু সংগঠক। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাদের দেখা গেছে নগরের বিভিন্নপ্রান্তে। কাছে যেতেই দেখা গেল কিছু পরিচিত মুখ।
পরে জানলাম ‘স্বপ্ন মিছিল’ নামক সেবামূলক সামাজিক সংগঠনটির উদ্যোগে প্রায় অর্ধশতাধিক রিকশা চালককে দেওয়া হচ্ছে রেইনকোট। শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে ঘন্টাব্যাপী চলে তাদের বিনামূল্যে রেইনকোট বিতরণ কর্মসূচি।
রেইনকোট হাতে পেয়ে রিকশা চালকদের খুশির সীমা ছিল না। ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক মো. মজিদ, আবুল হোসেন, মুমিনুল ইসলাম জয়নিউজকে জানান, বর্ষাকালে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। ভিজলে অনেক সময় জ্বর উঠে। এখন আমাদের আর ভিজতে হবে না। সংগঠনটির তরুণদের মাথায় হাত বুলিয়ে প্রাণভরে দোয়া করছিলেন তারা।
কথা বলে জানা গেল, কয়েকদিন আগে আশেপাশের রিকশা গ্যারেজে গিয়ে বয়স্ক ও সুবিধাবঞ্চিত রিকশা চালকদের খুঁজে বের করে স্বপ্ন মিছিলের সংগঠকরা। তাদের দেওয়া হয় স্লিপ। সেটা নিয়েই তারা এসেছেন রেইনকোট সংগ্রহ করতে।
কথা হয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অভিজিত বড়ুয়া রৌদ্রের সঙ্গে। তিনি জয়নিউজকে বলেন, শুধুমাত্র রেইনকোট বিতরণ নয়, ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর যাত্রা শুরুর পর থেকে স্বপ্ন মিছিল বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ফল উৎসব, বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, ইফতার ও ঈদবস্ত্র বিতরণ, বর্ষপূর্তি উদযাপন, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, শীতবস্ত্র বিতরণ, সর্বোপরি বিভিন্ন সেবামূলক, সামাজিক ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম প্রজেক্ট আকারে পরিচালনা করে আসছে। এটি আমাদের ৫৭তম প্রজেক্ট।
তিনি আরো জানান, তারা কারো কাছ থেকে অর্থ সহযোগিতা নেন না। সংগঠনের সদস্যদের মাসিক চাঁদা থেকে তারা এ ধরনের কার্যক্রম চালান। ‘সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষের পাশে’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ‘স্বপ্ন মিছিল’ এগিয়ে চলেছে।
রেইনকোট বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জনি, সদস্য আরাফাত, বিপলু, তাজিন, আশিক, জোনায়েদ, রিমন, রানা, তৃষা, সাব্বির, আকাশ, আফছার, ইসমাইল,জেসি, সবুজ, রূপা, সারাফাত, বিউটি, মহিউদ্দিন, সৈকত, সুমি, সোহেল, খোরশেদ, আবদুল্লাহ, রবিউল, দিদার, মাসুম, দেবরাজ, মুরাদ, মাসুদ, ফাতেমা, সাইকা।
জয়নিউজ/পার্থ/আরসি