তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পীড়াপীড়ি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আগ্রহে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে মেট্রোরেল (এমআরটি) নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শিগগিরই শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, নগরের জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়া, যানজট নিরসন ও বিকল্প যাতায়াত ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে মেট্টোরেল সার্ভিস চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কানে পীড়াপীড়ি করে আসছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত একনেক সভার কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পুনরায় চট্টগ্রামে মেট্টোরেল চালুর ব্যাপারে অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, চট্টগ্রাম শহরের জনসংখ্যা এখন ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নির্বিঘ্ন যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এখনই যদি মেট্টোরেলের উদ্যোগ নেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
তথ্যমন্ত্রীর পীড়াপীড়িতে চট্টগ্রাম শহরে মেট্টোরেল সার্ভিস চালুর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন উপস্থিত সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও । তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে এবিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে চট্টগ্রামের মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইনের ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করার নির্দেশ দেন।
নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মেট্রোরেলের সঙ্গে জড়িতদের বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জন্য অবিলম্বে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করার নির্দেশনা দেন বলে সূত্র জানায়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জয়নিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর, বন্দরনগরী ও বাণিজ্যিক রাজধানী। ৬০ বর্গমাইলের এ শহরে প্রতিদিন মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়ছে।
প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এমআরটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধিতা ও মামলার কারণে তা হয়নি। জনবান্ধব গণপরিবহনের জন্য এখন আবার এমআরটির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি চালু হলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থায় চট্টগ্রামের সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।
জানা গেছে, প্রতি কিলোমিটার মেট্রোরেল লাইন স্থাপনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। ফলে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটারে তিনটি মেট্রোরেল লাইনে সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৮৪ হাজার ২০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিনটি লাইনে মোট ৪৭টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রতিটি মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার। একটি ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটির মাধ্যমে ঘণ্টায় এর দুই প্রান্তের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী উভয় দিকে পরিবহন করা সম্ভব।
মঙ্গলবারের একনেক সভায় সড়কের কয়েকটি প্রকল্প পাস হয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় চট্টগ্রামে মেট্টোরেল (এমআরটি) চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।