সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখির জেরে ছাত্রশিবির নেতা আখ্যা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ঘটনার সময় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এমবিএ কোর্সের মৌখিক পরীক্ষাও সাময়িক স্থগিত হয়ে পড়ে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ অনুষদের দ্বিতীয় তলায় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মোহাম্মদ ইমরান মক্কী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। মারধরের সময় প্রক্টরিয়াল বডি তাকে উদ্ধার করে। একই সময় ইমরানের বন্ধু আব্দুল মালেককেও হেফাজতে নেয় প্রক্টরিয়াল বডি। পরে তাদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী ও লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাঈদুল ইসলাম সাঈদ এবং রাজু মুনশীর নেতৃত্বে আরও অনেকেই তাকে মারধর করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্ররা জানান, মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর কয়েকজন এসে ইমরানকে মারধর শুরু করে। এসময় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে কিছুক্ষণের জন্য ভাইভা বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাহিদুর রহমান বলেন, সামান্য সময়ের জন্য ভাইভা স্থগিত হয়েছিল। একই সময়ে লাঞ্চের বিরতি থাকায় তেমন প্রভাব পড়েনি। এখন সবকিছু স্বাভাবিক আছে।
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। তিনি জয়নিউজকে বলেন, শুনেছি তারা শিবিরের নেতা এবং একজনের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও রয়েছে।
তবে ছাত্রলীগের কেউ মারধর করার অধিকার রাখে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থীর গায়ে অন্য কারো হাত দেওয়ার অধিকার নেই। কারা এমনটা করেছে আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান জয়নিউজকে বলেন, এমবিএ কোর্সের ভাইভা চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে বেশ কয়েকজন মারতে উদ্যত হয়। এসময় শিক্ষকরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে ছাত্রদের একটি অংশ শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু সে শিবির কর্মী কি-না এমনটি আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। পরে তার এক বন্ধুকেও আমরা হেফাজতে নিই।
তিনি আরও বলেন, তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। তারা জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নিবে।
তবে এ বিষয়ে জানতে হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।