বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের অস্থায়ী অফিস উদ্বোধন হবে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি)। আবার এ দিনই অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কার্যালয়ে ভূমি কমিশনের অস্থায়ী অফিস উদ্বোধন করবেন কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ারুল হক। উদ্বোধনের পর সেই অফিসে প্রথমবারের মতো ভূমি কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনের দাবিতে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। সোমবার বান্দরবানের হিলবার্ড মোড়ে অবস্থান ধর্মঘটের পাশাপাশি স্মারকলিপি দেওয়া হবে কমিশনের চেয়ারম্যানকে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবানের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আলকাছ আল মামুন ভূইয়া। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিতে ছিলেন সংগঠনের নেতা কাজী মুজিবুর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলার নারী নেত্রী সালমা আহমেদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন তারু মিয়া, মো. আইয়ুব, মো. নাছির, নাছিরুল আলম ও মিজানুর রহমান।
আলকাছ আল মামুন ভূইয়া বলেন, সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে পাহাড়ের কোনো বাঙালি প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি। কমিশনের সদস্য তিন পরিষদ চেয়ারম্যান, ৩ সার্কেল চিফ (রাজা) এবং আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সবাই পাহাড়ি।
তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়ে পাহাড়ের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা এবং সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে ভূমি কমিশন আইন সংশোধনের দাবি জানান। একইসঙ্গে নাগরিক পরিষদ নেতা কাজী মুজিবুর রহমানকে পুলিশের এক কর্মকর্তা গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ায় নিন্দা জানান।
কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, পাহাড়ের বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি এবং ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হিলবার্ড মোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা সরকার কিংবা কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়। তারপরও পুলিশের এক কর্মকর্তা আমার বাসায় এসে হুমকি দিয়েছেন, কর্মসূচি বাতিল না করে রাস্তায় নামলে আমাকে গুলি করে হত্যা করা হবে। এটি খুবই দুঃখজনক।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই তৌহিদ বলেন, অনুমতি ছাড়া কোনো কর্মসূচি পালন করে বিশৃঙ্খলা তৈরি থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কোনো ধরণের হত্যা হুমকি দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালিদের দীর্ঘদিনের ভূমি সমস্যা নিরসনে গঠিত হয় পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন। কমিশনের আইনটি সংশোধনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে পার্বত্য নাগরিক পরিষদসহ কয়েকটি সংগঠন।
জয়নিউজ/আলাউদ্দিন