সমুদ্রে ভাসমান ৫ শতাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে টেলিফোনে অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে তাৎক্ষণিক তা প্রত্যাখ্যান করে উল্টো যুক্তরাজ্যকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ টেলিফোনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ অনুরোধ জানান।
গত কয়েকদিন ধরে সমুদ্রে ভাসছে প্রায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা। কিন্তু নতুন করে বাংলাদেশ আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ অবস্থায় কোনো দেশে যেতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে রোহিঙ্গারা। তবে বরাবরের মতো বাংলাদেশের কাঁধে তাদের চাপিয়ে দিতে পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে বর্তমানে শক্ত অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ।
টেলিফোনে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং সীমিত সম্পদ থাকা সত্বেও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে ইতোমধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। ৫০০ রোহিঙ্গা সে তুলনায় অতি সামান্য। তারা এখন বাংলাদেশ সীমানায় নেই। মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে অনুরোধ করা হলেও এ এলাকার অন্যান্য দেশকে আশ্রয় দিতে বলা হয়নি।
‘যুক্তরাজ্যের রয়েল জাহাজ এসেও তাদের উদ্ধার করে আশ্রয় দিতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীকে ড. মোমেন বলেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত বাংলাদেশে অবস্থানরত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেওয়া।’
ড. মোমেন আরো বলেন, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের দায়িত্ব বর্তায়। মিয়ানমারে এখনও মিলিটারি অপারেশন চলছে এবং রোহিঙ্গারা মারা যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা আবারও বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে সোচ্চার নয়।
তবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যকে করোনা প্রতিরোধে উপহার হিসেবে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাবে বলে লর্ড আহমেদকে এ সময় অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।