করোনা মহামারিতে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত পুরোবিশ্ব। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাজ্য।
দেশটিতে এ করোনা মহামারীতে সামনের সারিতে থেকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে বর্ষসেরা চিকিৎসক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ চিকিৎসক ডা. ফারজানা হোসেইন । ফারজানা ১৮ বছর ধরে পূর্ব লন্ডনে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত।
দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস- এনএইচএস এই ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পিকাডিলি সার্কাসের সামনের তাকে নিয়ে বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে। ব্রিটেনের সাটারস্টক ডটকম ছবিটি প্রকাশ করেছে।
এতে দেখা যাচ্ছে, বিলবোর্ডটির সামনেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ফারজানা হোসেইন। ফারজানা এবং তার টিম করোনা মহামারীকালীন ব্রিটেনের রোগীদের চিকিৎসা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
দুই কন্যা সন্তানের জননী ফারজানা হোসেইন যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল এ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইমারি কেয়ারের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করায় তার লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ডা. ফারজানা হোসেইন।
জানা গেছে, ফারজানা হোসেইনের বাবা স্বাধীনতার আগে ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। তিনি মূলত অ্যানেস্থেসিস্ট হিসেবে বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা করতে সেখানে যান।
পরের বছর যখন যুদ্ধ শুরু হল তখন তার বাবার বৃত্তি বাতিল হয়ে যায়। ওই সময় দেশেও ফিরতে পারেননি তিনি। স্ত্রী ও এক বছরের ছেলে সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন তিনি। এমন সময় যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে তিনি বেতন ছাড়াই দীর্ঘ দিন কাজ করেন।
ফারজানার যখন ১৯ বছর বয়স, তখন তার মা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ফারজানা মেডিকেল প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ওই সময় তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে মায়ের শেষ উপদেশ ছিল ‘আমি চাই তুমি চিকিৎসক হও এবং অসহায়দের সেবা করো।’
মায়ের এই কথাকে সম্বল করে পড়াশোনা চালিয়ে যান ফারজানা এবং নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তোলেন।