চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের অস্থায়ী আবাসস্থল ছিল মোটেল সৈকত। সেখানে মে ও জুন মাসের থাকা বাবদ ভাড়া এসেছে ৩২ লাখ টাকা। এ অবস্থায় মোটেল কর্তৃপক্ষের টাকা পরিশোধের তাগিদ থাকায় করোনাযোদ্ধা চিকিৎসকদের ছাড়তে হয়েছে সেই আবাস।
এতে দায়িত্ব পালন শেষে হঠাৎ আবাসস্থল ছাড়ায় ঝুঁকি নিয়েই পরিবারের সঙ্গে থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন চিকিৎসক।
জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য প্রশাসন মোটেল সৈকত রিকুইজিশন করে। এরপর মে মাস থেকে সেখানে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তারা। তবে মোটেল সৈকত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো চুক্তি হয়নি। এ অবস্থায় দুই মাসের অস্বাভাবিক বিল পরিশোধ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, সরকারের তরফ থেকে ইউটিলিটি বিল দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও মোটেল ভাড়া পরিশোধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। মে ও জুন মাসের ভাড়া এসেছে ৩২ লাখ টাকা। এ ভাড়া পরিশোধের ব্যাপারে নির্দেশনা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, মোটেলে যারা ছিলেন তাদের জন্য ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাইরে থেকে আনা খাবারের বিল আলাদাভাবে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বর্তমানে কেউ সেখানে থাকছেন না। বরাদ্দ পেলে মোটেল সৈকতের ভাড়া পরিশোধ করা হবে।
সরকার এই করোনাযোদ্ধাদের জন্য ভাতা দিচ্ছে। তাই তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে আপাতত কিছু চিকিৎসককে সরকারি লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, মোটেল সৈকতে ১৫৩টি আবাসিক কক্ষ। এর মধ্যে ৮টি স্যুট ও ১৪৫টি ডিলাক্স রুম। স্যুট কক্ষের ভাড়া ১০ হাজার টাকা, আবাসিক কক্ষের মধ্যে এসি স্যুট রুমের ভাড়া ৭ হাজার, এসি ডিলাক্স কুইন রুম ৩ হাজার, এসি স্ট্যান্ডার্ড টুইন বেড ৩ হাজার, নন এসি টুইন বেডের ভাড়া নেওয়া হয় ২ হাজার ৫শ টাকা। মে-জুন মাসে প্রতিদিন চিকিৎসক–স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকার জন্য মোটেল সৈকতে গড়ে ৪০ থেকে ৫০টি কক্ষ ব্যবহার করেন।
এ ব্যাপারে মোটেল সৈকতের ব্যবস্থাপক সরোয়ার উদ্দিন বলেন, নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে আরও কম হিসাব করে দুই মাসের ভাড়া এসেছে ৩২ লাখ টাকা। এ ভাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর পরিশোধ করবে।