ইউরোপের দেশগুলোতে ক্রমাগত বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) থেকে ফের সম্পূর্ণ লকডাউনের নির্দেশ দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও সোমবার (২ নভেম্বর) থেকে আংশিক লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে করোনার সংক্রমণ হয়েছে ৩৪ হাজার। বৈঠকে বসেন মাক্রোঁ। জরুরি ভিত্তিতে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন তিনি। দেশের মানুষের কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন সকলে নিয়ম মানেন।
মাক্রোঁর বক্তব্য, যে ভাবে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে দ্রুত হাসপাতালগুলি ভর্তি হয়ে যাবে। মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। অন্য প্রদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাও সম্ভব হবে না। কারণ, দেশের সর্বত্র করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই সময়ে লকডাউন মানতেই হবে সকলকে। খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। এর জন্য যে আর্থিক ক্ষতি হবে, সরকার সে দিকে লক্ষ্য রাখবে বলেও মাক্রোঁ কথা দিয়েছেন।
আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নিয়ম চালু থাকবে। তারপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
করোনা সংক্রমণের নতুন ঝুঁকিতে জার্মানির মিউনিখ শহর৷ বার্লিনে হঠাৎ করেই বেড়েছে সংক্রমণ৷ আর তাই রাতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন৷ শহরটিতে ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কারফিউ জারি করা হলো৷ রাত ১১টার মধ্যে দোকানপাটসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ আপাতত অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ পাঁচ জনের বেশি মানুষ রাত ১১টার পর ঘরের বাইরে এক হতে পারবে না৷
স্কুল, কাজ এবংচিকিৎসার প্রয়োজনে মানুষ বাড়ির বাইরে বেরতে পারবেন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্যও বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরলেই প্রশাসনকে তার কারণ জানাতে হবে। এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাতায়াত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। বার, রেস্তোরাঁ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া ঘোরাঘুরি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার রাতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও আংশিক লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছেন। খুব প্রয়োজন না হলে জার্মান নাগরিকরা যাতে বাড়ির বাইরে না বের হন, তার অনুরোধ জানিয়েছেন চ্যান্সেলর। স্কুল খোলা থাকলেও অনলাইন ক্লাসের উপর জোর দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়েছেন, গণপরিবহন চালু থাকবে। কিন্তু একসঙ্গে বেশি মানুষ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। কোনো সমাবেশে দশ জনের বেশি একত্রিত হতে পারবেন না। সিনেমা হল, থিয়েটার বন্ধ থাকবে। বার, রেস্তোরাঁও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। পর্যটকদের জন্য হোটেল বন্ধ। বিশেষ দরকারে কেউ হোটেলে থাকতে পারেন।
ইতালি এবং স্পেনও গত ২৪ ঘণ্টায় সব চেয়ে বেশি সংক্রমণের কথা জানিয়েছে। তারই মধ্যে ইতালিতে কড়াকড়ির বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। রাস্তায় পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ চলছে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
জয়নিউজ/পিডি