লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার গুজবে শহিদুন্নবী জুয়েলকে গণপিটুনি দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে রাষ্ট্রীয় এক গোয়েন্দা সংস্থা। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিনের ঘটনায় কোরআন অবমাননার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট মসজিদের খাদেম জাবেদ আলী ও ডেকোরেটর দোকানের মালিক হোসেন আলী ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মেম্বার হাফিজুল ইসলামকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার বেগম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত কোনোভাবেই এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল এলাকায় অত্যান্ত প্রভাবশালী। তারপরেও কেন তিনি জুয়েলকে রক্ষা করতে পারলেন না এটা দুঃখজনক। এছাড়া জুয়েলের বাবা ওয়াজেদ আলী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুলের শ্বশুর সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবেদ আলী ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জুয়েল উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখাও করেছেন। ফলে জুয়েল যে মানসিক ভারসাম্যহীন সে বিষয়টি চেয়ারম্যান বাবুল জানতেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থল বন্দরে অবস্থিত মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন জুয়েল। এসময় তাকে পবিত্র কোরআন অবমাননা করার মিথ্যা অভিযোগ এনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
জানা গেছে, রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান লাইব্রেরিয়ান হিসেবে চাকরি করতেন জুয়েল। এক বছর আগে তাকে চাকরিচ্যূত করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তার চিকিৎসা চলছিলো। নিহত জুয়েল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করতেন। এছাড়া হজ পালন করার প্রস্তুতিও ছিলো তার।