ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা লড়াইয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ভাবা হচ্ছিল রবিবারের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-আর্সেনালের ম্যাচটিকে।
এই ম্যাচে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডের জয়ের প্রত্যাশায় ছিল ম্যানচেস্টার সিটিও। আর্সেনালের পয়েন্ট হারালেই ট্রফিতে এক হাত রাখতে পারত সিটি। তবে সিটিকে সে সুযোগ দিল না এমিরেটসের দলটি।
ইউনাইটেডের মাঠে ১-০ গোলে জিতে শিরোপা লড়াইয়ে দারুণভাবে টিকে থাকল গানাররা। পাশাপাশি এ জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে আসল মিকেল আরতেতার দল। ৩৭ ম্যাচ শেষে আর্সেনালের পয়েন্ট এখন ৮৬। এক ম্যাচ কম খেলে সিটির পয়েন্ট ৮৫।
ইউনাইটেডের বিপক্ষে জিতে আর্সেনালের চোখ এখন মঙ্গলবার রাতে ম্যানচেস্টার সিটি-টটেনহাম ম্যাচে। সেদিন টটেনহামের বিপক্ষে সিটি পয়েন্ট হারালেই শিরোপা রেসের ব্যাটনটা চলে আসবে আর্সেনালের হাতেই। তবে সেই ম্যাচে ফল যাই হোক, এটুকু নিশ্চিত যে শেষ দিনেই নির্ধারিত হবে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যাচের প্রথম কয়েক মিনিট বল ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বক্সে। প্রথম চার মিনিটের মধ্যে কয়েকবার আক্রমণেও যায় আর্সেনাল, কিন্তু পাওয়া হয়নি কাঙ্ক্ষিত গোলটি। শুরুর এই চাপ কাটিয়ে দ্রুত ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে ইউনাইটেড। প্রতি-আক্রমণ থেকে দারুণ একটি সুযোগও পেয়েছিল তারা।
কিন্তু সুবিধাজনক জায়গায় থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হন রাসমুস হইলুন্দ। একটু পর কাছাকাছি গিয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন আলেহান্দ্রো গারনাচোও।
এরপর ধীরে ধীরে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউনাইটেডের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করে আর্সেনাল। কয়েকবার চেষ্টা করে ফিরে আসলেও ২০ মিনিটের মাথায় ঠিকই ইউনাইটেড রক্ষণ ভেঙে ফেলে গানাররা।
ইউনাইটেডের রক্ষণের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন কাই হাভার্টজ। দারুণ এক পাসে হাভার্টজ বল বাড়িয়ে দেন লিয়ান্দ্রো ত্রোসারের উদ্দেশ্য। এই সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি ত্রোসার। নিঁখুত ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়িয়ে এগিয়ে দেন দলকে। এটি সর্বশেষ ৬ লিগ ম্যাচে ত্রোসারের চতুর্থ গোল।
গোল খেয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা করে ইউনাইটেড। চেষ্টা করে আক্রমণে গিয়ে আর্সেনালকে চাপে ফেলার। বিরতির আগে একাধিক সুযোগও তৈরি করে তারা। যদিও সমতা ফেরানোর জন্য সেসব যথেষ্ট ছিল না। আর্সেনালের জমাট রক্ষণের বাধা পেরোতেই পারেনি এরিক টেন হাগের শিষ্যরা।
এদিন প্রথম ৩৫ মিনিটে ৬টি শট নেয় ইউনাইটেড, যার কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গারনাচো-হইলুন্দরা ইউনাইটেডের চাপে আর্সেনাল এ সময় প্রতি-আক্রমণ নির্ভর হয়ে পড়ে। তবে বিরতির আগে ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি তারা।
বিরতির পরও আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণে জমে উঠে ম্যাচ। গোলের খোঁজে দুই দলই এ সময় আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয়। কিন্তু উভয় দলই রক্ষণে দারুণ দৃঢ়তা দেখানোয় মিলছিল না গোলের দেখা। ইউনাইটেডের হয়ে একাধিকবার গোল করার মতো অবস্থানে পৌঁছে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সমতা আনতে পারেননি গারনাচো।
৬৫ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ আসে মার্টিন ওডেগার্ডের সামনে। কিন্তু দুর্বল শটে সে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন ওডেগার্ড। গতিময় ফুটবলে পরবর্তী সময়ে দুই দলই উপহার দেয় রোমাঞ্চ।
৭৯ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট দারুণভাবে রুখে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। পাল্টা আক্রমণ থেকে আবারও কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হন গারনাচো।
৮৩ মিনিটে ফের ইউনাইটেডকে রক্ষা করেন ওনানা। এরপর শেষ দিকে দুই দলই মরিয়া হয়ে গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা কোনো দলই পায়নি। প্রথমার্ধে করা ত্রোসারের গোলটিই শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
জেএন/পিআর