চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগ নেতা অপহরণের ঘটনায় রাতভর অবরোধ, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর হয়েছে।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
জানা যায়, রাতে চবি ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রসুল নিশানকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরে উদ্ধারও করা হয় তাকে। কিন্তু এ ঘটনার জের ধরে রাতভর উত্তপ্ত ছিল চবি ক্যাম্পাস।
নিশান চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও ‘উল্কা’ গ্রুপের নেতা। শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে একই কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় লালখান বাজার মোড় থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে নগরের টাইগারপাসের ঝাউতলা স্টেশনের পাশের একটি পাহাড় থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এছাড়াও প্লাস দিয়ে তার নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে নিশানের অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট ও এক নম্বর গেট এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে তার অনুসারীরা। তার অনুসারীদের অভিযোগ শাখা ছাত্রলীগের ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে।
একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। এতে আহত হয় অন্তত দশজন। আহতরা হলেন ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের একাউন্টিং বিভাগের মিলন, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাংবাদিকতা বিভাগের শামীম, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ধ্রুব, পদার্থবিদ্যা বিভাগের আনিস, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের মাহমুদুল ইসলাম ও মামুন ইসলাম, একই শিক্ষাবর্ষের সাদ্দাম হোসেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অর্ণব ইসলাম, আরবি বিভাগের ইমাম, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অভয় ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সৌরভ তালুকদার। এদের মধ্যে তিনজনের মাথায় ও চোখে আঘাত লাগায় চমেকে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উল্কা গ্রুপের নেতা সুমন খান জয়নিউজকে বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে নিশানকে অপহরণ করা হয়। পরে আমরা অবরোধ করতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি চলছে, চলবে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা মনসুর আলম জয়নিউজকে বলেন, ‘ওর (নিশান) সঙ্গে কী হয়েছে, কে বা কারা অপহরণ করেছে আমরা এ ব্যাপারে অবগত নই। আমি তো ফেসবুকে জানলাম। আমাদের বিরুদ্ধে কেউ যদি অভিযোগ করে করে থাকে সেটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে করেছে। আমাদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে তারা ঈর্ষান্বিত বলেই এমন অভিযোগ তুলছে। এ ব্যাপারে কথা বলতেও আমার লজ্জা লাগছে।’