প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এমদাদুল হকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগে পুনরায় পরীক্ষা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে অপহরণের ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
রোববার (৫ মে) এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এদিন দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের তদন্ত প্রতিবেদন পাঠ করে শোনান।
অপহরণের ঘটনায় জড়িত সাত ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে এমদাদুল হকের অভিযোগ পর্যালোচনা করে তিনজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তিন ছাত্রলীগ কর্মী হল প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মোকসেদ আলী, আনোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহমুদ।
আরও পড়ুন: শিবির করার অভিযোগে চবির সাবেক ছাত্রকে পেটাল ছাত্রলীগ
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- ২৭ মার্চ পরীক্ষা দিতে এসে প্রার্থী এমদাদুল হক কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ৩ এপ্রিল উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। সেদিনই ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনা পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এমদাদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এলে কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। অভিযোগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত যে সাতজনের নাম উল্লেখ করেছেন তাদের মধ্যে তিনজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
এ ঘটনায় তিনটি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। তা হল- মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা প্রদানকারী তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সাক্ষাতকার পরীক্ষাটি বাতিল করা যেতে পারে এবং প্রভাষক পদে প্রার্থী এমদাদুল হকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এসময় তদন্ত কমিটি প্রধান ও সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দীন বলেন, তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরের সঙ্গে আলাপ করেছি। একইসঙ্গে আদালতের মাধ্যমে প্রার্থীকে চিঠি দিয়েছি যে, আপনার অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হয়েছে। এতে আপনাকে অংশগ্রহণে বাধা প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং আমরা পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। উক্ত পরীক্ষায় আপনাকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ এবং সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ, ২৭ মার্চ প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসলে ছাত্রলীগের একাংশ কর্তৃক অপহৃত হন ওই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এমদাদুল হক। ওইদিন বিকেলে শিবির সম্পৃক্ততার অভিযোগে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় তাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে শারিরীক লাঞ্ছনার অভিযোগ করে মামলা দায়ের করেন তিনি। একইসঙ্গে উপাচার্য বরাবরও অভিযোগ করেন তিনি।