এক টাকায় দুইটি কাঁচামরিচ!

ত্রিশোর্ধ্ব সুফিয়া আক্তার কাঁচাবাজারে শাকসবজি কেনার পর একটা ৫ টাকার একটি নোট বাড়িয়ে দিলেন কাঁচামরিচ বিক্রেতার মো. এমরানের দিকে। বিক্রেতা টাকা নেওয়ার বদলে ক্রেতার দিকে একটা তাচ্ছিল্যভরা হাসি দিয়ে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি (সুফিয়া) তো অবাক!

- Advertisement -

সুফিয়া হাটহাজারীর মেডিকেল গেট এলাকার একটি কলোনীতে ভাড়া বাসায় বসবাসকারী রিক্শাচালক মো. নাঈম উদ্দিনের স্ত্রী।

- Advertisement -google news follower

বাজার শেষে এ বিক্রেতার কাছ থেকেই তো তিনি সব সময় ৫ টাকার মরিচ কেনেন। কিন্তু আজ তার প্রতি বিক্রেতার এমন তাচ্ছিল্যের ভাব কেন? সুফিয়া ব্যাপারটা একটু পরই পরিষ্কার হয় যখন অন্য এক ক্রেতা মরিচ কিনতে আসেন। মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকায়। ১০০ গ্রাম মরিচের দামই যেখানে ২৫ টাকা। ক্রেতারা তাই কেউ ৫০ গ্রাম এবং কেউ বা ১০০ গ্রাম মরিচের জন্য বিক্রেতার কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। এর চেয়ে বেশি মরিচ কেউ নেওয়ার সাহস পাচ্ছে না।

সুফিয়া মরিচের বর্তমান বাজারদর সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতাজনিত কারণে লজ্জিত হন। তিনি শেষ পর্যন্ত ১২ টাকার বিনিময়ে ৫০ গ্রাম মরিচ কিনেন। পরবর্তীতে দেখা গেল ওই ৫০ গ্রাম ওজনের মরিচের সংখ্যা হল ২৫টি। তারমধ্যে একটি মরিচ ছিল পঁচা। ফলশ্রুতিতে দেখা দুইটি মরিচের দাম পড়েছে এক টাকা।

- Advertisement -islamibank

রান্নাঘরের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান কাঁচা লঙ্কা নিয়ে বাজারে এমনই কত লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে তা গত দুই দিন-তিন ধরে যারা কাঁচাবাজারে দিকে পা বাড়ায়নি তাদের জানার কথা নয়। সবরকম সবুজ সবজির দামেই এখন আগুন।

বাজারে একমাত্র আলু আর মিস্টিকুমড়ো ছাড়া কোনো সবজিই মিলছে না ৪০-৬০ টাকার নিচে। দুদিন আগের ৭০-৮০ টাকার মরিচ এক লাফে প্রায় চারগুণ বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

অকল্পনীয় এ দাম বৃদ্ধিতে হতবিহ্বল ক্রেতারা। আগে যেখানে একপোয়া বা আধা কেজি মরিচ কিনত বর্তমানে সে জায়গায় তারা কিনছেন সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম। কারণ বর্তমান ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচের মূল্যই আগে কমপক্ষে একপোয়া মরিচ কেনা যেত।

এতে বাড়তি খরচ কমাতে রান্নাঘরের এ অতীব প্রয়োজনীয় জিনিসটি মানুষকে পরিমাণে কম কিনতে হচ্ছে। সে জায়গাটি পূরণ করছে গুঁড়ো মরিচ দিয়ে।

হাটহাজারী বাজারে কাঁচাবাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষিকা নুসরাত জাহান বলেন, এত বেশি দাম দিয়ে কাঁচা মরিচ কখন কিনছি মনে করতে পারছি না। আমার বাসায় প্রতি দুদিন অন্তর একপোয়া কাঁচা মরিচের প্রয়োজন হলেও খরচ কমাতে এখন সে জায়গায় ৫০-১০০ গ্রাম মরিচ দিয়ে কোনো মতে কাজ চালিয়ে দিতে হচ্ছে। বাচ্চারা খেতে না চাইলেও বেশির ভাগ রান্নাই এখন গুঁড়ো মরিচ দিয়ে করতে হচ্ছে।

জয়নিউজ/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM