চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে রাত পোহালেই ভোট। ভোট উপলক্ষে প্রস্তুত ১৭টি ভোটকেন্দ্র।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
এ ওয়ার্ডে ভোটার আছেন ৪৯ হাজার ৭৮২ জন। ভোটের লড়াইয়ে আছেন ৬ প্রার্থী।
ওয়ার্ডের কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কিছু কেন্দ্রে গোপন কক্ষ তৈরির কাজ চলছে। বুধবার সকালেই ভোটগ্রহণের মালামাল কেন্দ্রে কেন্দ্র পৌছেছে। সেখানে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে কেন্দ্র গোছানোর কাজ চলছে।
পশ্চিম বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে এবং সহজে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৭টি ভোটকেন্দ্রের ১২৪টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ১৭ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১২৪ জন সহকারি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২৪৮ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের প্রস্তুতি সম্পন্ন। ভোটাররা যাতে সহজে ভোট দিতে পারেন, সেটি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সব কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে দুইজন করে পুলিশ সদস্য ও ১২ জন করে আনসার সদস্য দায়িত্বে থাকবেন।
পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। র্যাব-পুলিশের একাধিক টিম নির্বাচনি এলাকায় টহলে থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো থাকবে প্রশাসনের নজরদারিতে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে ২৫ জুলাই শূন্য কাউন্সিলর পদে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রয়াত কাউন্সিলর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি একেএম জাফরুল ইসলামের ছেলে একেএম আরিফুল ইসলাম ডিউক, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল আলম, সরকারি সিটি কলেজের সাবেক ভিপি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাসুদ করিম টিটু, নগর যুবলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. শফি ও যুবলীগ নেতা শেখ নাঈম হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগের ৫ প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপির একক প্রার্থীর কারণে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন বিএনপির ডিউক। এছাড়াও বাকলিয়া এলাকা বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বিগত দুইবারের নির্বাচনে বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন ডিউকের পিতা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি একেএম জাফরুল ইসলাম। যার কারণে পিতার শূন্য আসনে ছেলে ডিউকও চমক দেখাবে এমন বিশ্বাসে বিএনপির সমর্থন পান তিনি। নির্বাচনে পিতার প্রতীক মিষ্টি কুমড়া নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডিউক।
এছাড়াও অনেকেই বলছেন, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বাকলিয়ার বাসিন্দা হওয়ার কারণে তার জনপ্রিয়তা ও পিতা জাফরের জনপ্রিয়তা কাজে লাগাবেন তিনি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের ৫ প্রার্থীর মধ্যে শহিদুল আলম তিনবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ ও ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ডিউকের পিতা একেএম জাফরুল ইসলামের কাছের পরাজিত হন তিনি। নগর রাজনীতিতে শহিদুল আলম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মাসুদ করিম টিটু সরকারি সিটি কলেজে ছাত্রলীগের প্যানেলের এজিএস, ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি ওয়ার্ড ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। টিটু সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রেডিও প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন টিটু।
শাহেদুল ইসলাম শাহেদ অবিভক্ত চান্দঁগাও থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ছিলেন ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতিও। এছাড়াও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগর যুবলীগের সহসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শাহেদ। নগরের রাজনীতিতে তিনি সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমিন ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে শেখ নাঈম হোসেন ওয়ার্ড যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মো. শফি বিগত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটির সহসভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে। নির্বাচনে তিনি লাটিম প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।