চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে ১৪ জুলাই মধ্যরাতে। ২৯ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি রেজাউল হক রুবেল অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধের ঘোষণা দেন। কিন্তু ঘোষণার কিছুদিন যেতে না যেতেই পুরানো রূপে দেখা গেল ছাত্রলীগকে। পুরানো কায়দায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রতিপক্ষ গ্রুপের কর্মীকে মারধর এবং রামদা- রড নিয়ে মহড়ায় জড়িয়ে পড়েছে বগিভিত্তিক গ্রুপগুলো।
চুরি’র অভিযোগে গ্রুপত্যাগী কর্মীকে মারধর
রোববার (৪ আগস্ট) মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে নিজ দলের কর্মীকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয়ের অন্য কর্মীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় শহীদুল ইসলাম শহীদ নামে মারধরের শিকার ওই ছাত্রকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) পাঠানো হয়েছে। সে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
শহীদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারী ও বিজয় গ্রুপের কর্মী ছিল। সম্প্রতি শাখা কমিটি ঘোষণার পর সে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বাধীন সিএফসি গ্রুপে যোগ দেয়। মারধরের পর সিএফসি শহীদকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করলে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
শাটলে সিটের জন্য মারধর
একইদিন (৪ আগস্ট) শহরে যাওয়ার জন্য বিকেল সাড়ে ৫টার ট্রেনে সিট ধরা নিয়ে ‘বিজয়’ গ্রুপের কর্মী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র বখতিয়ারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের কর্মীদের। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে বখতিয়ারকে মারধর করে তারা। মারধরকারীরা প্রথম বর্ষের ছাত্র বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। বিজয় গ্রুপের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে রামদা, রড ও ইটপাটকেল নিয়ে অবস্থান নেয়। পরে রাত ১০টার দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের দুই কর্মী ওই হলের সামনে আসলে তাদের পিটিয়ে জখম করে বিজয়ের কর্মীরা।
এরা হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মুজিব ও দেলোয়ার হোসেন ফারাবী। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ফারাবীকে সিএমসিতে পাঠানো হয়।
এসময় রামদা, রড নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায় বিজয় গ্রুপের কর্মীদের। অন্যদিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে একইভাবে মহড়া দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এব্যাপারে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর বলেন, পুলিশ এসে তাদের শান্ত করে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সহকারী প্রক্টর রিফাত রহমান বলেন, যারা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে তাদের কোনরকম ছাড় দেওয়া হবে না। প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে। উস্কানীদাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেতৃবৃন্দ কি বলছেন
এ বিষয়ে কথা বলতে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু জয়নিউজকে বলেন, আমরা খোঁজ নিয়েছি। যারা যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। সমাধানের পথে না হেঁটে অস্ত্র নিয়ে মহড়াটা তো ঠিক না। আমরা ব্যবস্থা নিব।