নগরের ফুটপাতে কোনো ধরনের খাবার বিক্রয় না করার আহ্বান জানিয়েছেন নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রীমা কনভেনশন সেন্টারে নগরের হোটেল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ফুটপাতের খাবার নিরাপদ নয়। আমরা চাই আমাদের শহরে বিশুদ্ধ খাবার প্রস্তুত এবং বিক্রয় হোক।
হোটেল-রেঁস্তোরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য তৈরিতে হোটেল রেঁস্তোরার মালিকদের মানসিকতার পরিবর্তনের উপর গুরুত্বারোপ করে আরো বলেন, হোটেল রেঁস্তোরায় জরিমানা করা চসিকের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে নগরীতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার, নগরের হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা দিদারুল আলম, পুলিশ প্রশাসনের এডিসি কাজীমুল রশিদ, হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির চেয়ারম্যান ইলিয়াছ আহমেদ ভূঁইয়া, কো-চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদুল হান্নান বাবু, ক্যাবের সহসভাপতি এসএম নাজির হোসেন, ইপসার কর্মকর্তা ওমর সাহেদ হিরু, চসিক মডার্ন খাদ্য পরীক্ষাগারের মাইক্রো বায়োলজিস্ট আশীষ কুমার দাশ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান ও চসিকের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইয়াসিনুল হক চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এপ্রসঙ্গে মেয়র আরো বলেন, সরকার জনস্বার্থে আইন প্রণয়ন করে থাকে। এ আইন পরিবর্তনের কোনো সুযোগ চসিকের নেই। আমরা চাই আপনারা সরকার প্রণিত আইন মেনে চলুন। যেকোনো ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে সরকারি নিয়ম-নীতি কিংবা আইন জানতে হবে। আইন না জানার অজুহাত কোনোভাবে কাম্য নয়। এ মানসিকতা থেকে সংশ্লিষ্টদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মেয়র বলেন, প্রতিটি রেঁস্তোরায় একজন ম্যানেজার থাকে। এ ম্যানেজারকে সচেতন করতে হবে মালিককে। এ প্রসঙ্গে ভোক্তার নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে নগরের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১৯টি করণীয়াদি আরোপ করেন চসিক মেয়র।
শর্তগুলো বাস্তবায়নে চসিকের পক্ষ থেকে হোটেল রেঁস্তোরা বরাবরে ফেস্টুন দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার জন্য গরিব মানুষও এখন নিরাপদ পানি কিনে খাচ্ছে। পঁচা, বাসি, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার নিজে খাবেন না, ভোক্তাদের কেন খাওয়াবেন? কর্মচারীরা যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে সেদিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন মেয়র।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার বলেন, জনগণের স্বার্থে আইন তৈরি ও প্রয়োগ হয়। আইন জানতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে অপরাধ সংঘটিত হলে এবং অপরাধী অপরাধ স্বীকার করলে জরিমানা বা শাস্তি দেওয়া হয়। জরিমানার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে চলে যায়। সচেতন করার জন্যই জরিমানা করা হয়। হোটেল মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার বাসার রান্নাঘরের পরিবেশ ও হোটেলের রান্নাঘরের পরিবেশ দেখুন। আপনারা সচেতন হলে আমরা আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাব।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আমরা কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই। দই তৈরি করতে হলে বিএসটিআইর লাইসেন্স নিতে হবে।
হোটেল রেঁস্তোরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদুল হান্নান বাবু চসিকের ফেস্টুনের সিদ্ধান্ত কার্যকরে একবছর সময় চান। তিনি এ সময়ের পরই হোটেল রেঁস্তোরায় চসিকের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অনুরোধ জানান।
তবে হোটেল রেঁস্তোরা মালিকদের আবেদনকৃত সময়ের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণে মতপ্রকাশ করেন মেয়র।
এ মতবিনিময় সভায় প্রায় পাঁচশত হোটেল রেঁস্তোরার মালিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।