অশুভশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হিন্দু সমাজকল্যাণ পরিষদের নেতারা।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মহালয়া তিথিতে অসহায় দুস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গনি চৌধুরী।
হিন্দু সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি প্রদীপ দে’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজের সাংবাদিক প্রীতম দাশ। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, সাংবাদিক রূমন ভট্টাচার্য।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন চসিক পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন চৌধুরী, আলোকচিত্রী কমল দাশ, ন্যাপ নেতা স্বপন সেন, বিপ্লব চৌধুরী, অ্যাডভোকেট দেবাশীষ দে মুন্না, উত্তর জেলা ছাত্রলীগ নেতা ইমরান আহমেদ ইমু, প্রদীপ কান্তি বিশ্বাস, সঞ্জয় তালুকদার, বিপ্লব দাশগুপ্ত, তাপস দাশগুপ্ত, কল্যাণ ভট্টাচার্য ও রুবেল সরকার।
প্রধান অতিথি ইউনুস গনি চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’ বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল। এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। নিজেদের সংখ্যালঘু ভাবার মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করতে হবে। সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসাম্প্রদায়িক ও উন্নয়নশীল দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সে লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সাংবাদিক প্রীতম দাশ বলেন, অন্তহীনকাল ধরেই অশুভ শক্তির জাগরণে শুভশক্তির বিপর্যয় ঘটে বারবার। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জগতের দুর্গতি নাশ করাই হচ্ছে দুর্গা পূজার মূল মর্মবাণী। শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু বাঙালি হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব নয়, দুর্গাপূজা এখন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সর্বজনীন উৎসব। শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এ উৎসব অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। দুর্গাপূজা হয়ে ওঠেছে সব সম্প্রদায়ের সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি-শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রেরণার এক অনন্য সামাজিক উৎসব।
তিনি বলেন, সকল অন্যায়-অবিচার ও অশুভ শক্তি বিনাশে মা দুর্গার আবির্ভাব ঘটেছিল। মা দুর্গার আরাধনার মধ্য দিয়ে সমাজে বিদ্যমান সকল সংঘাত-সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিময় দেশ গড়ে তুলতে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। অশুভ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক অপশক্তি জনগণের শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে তৎপর। দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার কাছ থেকে প্রেরণা লাভ করে সমাজে বিদ্যমান নানা অসঙ্গতি, শোষণ-বৈষম্য, অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধে অশুভশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তি প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে।
অনুষ্ঠানে শতাধিক গরীব, অসহায়-দুস্থ নারী-পুরুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়।