নগরের বিভিন্ন স্কুলে ক্লাসপার্টির নামে চলছে রমরমা বাণিজ্য। কোনো কোনো স্কুলে ক্লাসপার্টির এন্ট্রি ফি এতো বেশি যে সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার টাকা না দিলে বার্ষিক পরীক্ষায় নাম্বার কম দেওয়া হবে বলেও অনেকক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
নগরের বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুল, সেন্ট জোসেফ স্কুল, ওয়েস্টার্ন স্কুল এন্ড কলেজ, সেন্ট মেরিস স্কুলসহ প্রায় সব স্কুলে চলছে ক্লাসপার্টি। কয়েকটি স্কুলতো ক্লাসপার্টি করছে নগরের নামাদামি রেস্টুরেন্টে!
বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের এক অভিভাবক ক্ষোভপ্রকাশ করে জয়নিউজকে বলেন, আমার সন্তানের মাসিক বেতন সাড়ে তিন হাজার টাকা। ১৫ তারিখের পরে বেতন দিলে ৫০০ টাকা বাড়তি দিতে হয়। আর যদি সেটি পরের মাস হয় তাহলে বাড়তি দিতে হয় হাজার টাকা। প্রতিবার পরীক্ষার ফি হিসাবে নেয় ১ হাজার ১শ’ টাকা। সেই সঙ্গে খাতার জন্যও টাকা দিতে হয়। সবমিলিয়ে ওরা আমাদের সঙ্গে রীতিমতো ব্যবসা করছে।
এ ব্যবসার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ‘ক্লাসপার্টি’ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আমার সন্তানকে বলা হলো ক্লাসপার্টির জন্য ৮০০ টাকা জমা দিতে। সবার পক্ষে তো এত টাকা দেওয়া সম্ভব না। একেক শ্রেণির ক্লাসপার্টি নাকি একেক রেস্টুরেন্ট হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফোনে এলিমেন্টারি স্কুলে যোগাযোগ করা হলে হিসাবরক্ষক মমিনুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, আসলে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলে টাকার অঙ্কটা ঠিক করেছিলাম। যারা অভিযোগ দিয়েছে তা ঠিক না। আমরা সবার মতামত নিয়ে ক্লাসপার্টি করেছি। এছাড়া টাকার অঙ্ক ঠিক করতে আমরা অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম।
এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রধান শিক্ষককে ফোন দিতে বললে তিনি রাজি হননি।
এদিকে সেন্ট মেরিস স্কুলে ক্লাসপার্টির জন্য ৩০০ টাকা এবং ম্যাগাজিনের জন্য ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ক্লাসপার্টির সঙ্গে আবার ম্যাগাজিন কেন জিজ্ঞেস করা হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, বাচ্চারা বার্ষিক পরীক্ষার পর একেক জন একেক জায়গায় চলে যাবে তাই ম্যাগাজিন বানাচ্ছি।
তবে এ ক্লাসপার্টির টাকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন একাধিক অভিভাবক। নাজরিন বেগম নামে এক অভিভাবক জয়নিউজকে বলেন, এভাবে কি টাকা দেওয়া সম্ভব? বেতন আছে, সেই সঙ্গে খাতা, তারউপর এখন আবার ক্লাসপার্টি। শুধু ক্লাসপার্টির নয়, সঙ্গে নাকি ম্যাগাজিনের টাকাও। স্কুলতো ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। তারা বলছে ক্লাসপার্টি বাধ্যতামূলক, না হলে নাকি নাম্বার কম দিবে।
এদিকে ওয়াস্টার্ন স্কুল এন্ড কলেজ ক্লাসভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে ক্লাসপার্টির জন্য। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্কুলশিক্ষক জয়শ্রী দেব জয়নিউজকে বলেন, এটা তো বাচ্চাদের আনন্দের জন্য। তাদের বার্ষিক পরীক্ষা সামনে, তাই এটা করা।
তবে ওয়াস্টার্ন স্কুলের এক অভিভাবক বলেন, মাসে ৫০০ টাকা করে বেতন দিচ্ছি। এর সঙ্গে পরীক্ষার ফি। এখন আবার ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে ক্লাসপার্টির জন্য।
জয়নিউজ