নগরের বায়জিদ বোস্তামি এলাকা একসময় ছিল পাহাড় আর সবুজে ঘেরা। কিন্তু সেই পাহাড় কেটে শেরশাহ বাংলাবাজার থেকে এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির পাশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে একটি বাইপাস সড়ক। এ বাইপাস সড়ক ফৌজদারহাট হয়ে যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে।
এ সড়কের জন্য অন্তত ১৫টি পাহাড় কেটেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। আইন ভঙ্গ করে পাহাড় কাটার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর ১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে সিডিএকে।
পাহাড় ধ্বংসের এ খেলায় সিডিএর পাশাপাশি জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালীরাও। এক্ষেত্রে সিডিএ থেকে তারা এককাটি উপরে। পাহাড় কাটা কিংবা মাটি লুটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তারা। সড়কের পাশের অবশিষ্ট পাহাড় দখল করে তারা গড়ে তুলেছে অবৈধ বসতি। পাহাড়ের পাশাপাশি গাছপালাও সাবাড় করে দিচ্ছে তারা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রভাবশালীরা বিভিন্ন নামে পাহাড়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে সাইনবোর্ড। দিনদুপুরে এমন দখলবাণিজ্য চললে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তর পাহাড়তলী মৌজার ৭৭৩-৭৭৪, ৩০১, ২০০, ১৯৮, ১৩৯, ১৯৫, ১৮৭; জঙ্গল সলিমপুর মৌজার ৩৬১, ৩৫৯, ৩৫৭, ৩৫৮ এবং জঙ্গল লতিফপুর মৌজার ৬২, ৬০, ৬১, ৬২ ও ৩৪নং দাগের পাহাড় কেটে নির্মিত হয়েছে সড়কটি।
নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের এই সড়ক তৈরি করতে কাটা হয়েছে ১৫টি পাহাড়। ছোট্ট একটি সড়ক করতে এত পাহাড় কাটার ঘটনা অতীতে কখনই ঘটেনি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর উপপরিচালক (মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট) ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন জয়নিউজকে বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা সবসময় দখল করে সরকারি জমি। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ও তারা ছিল, এখনও আছে। যাদেরকে আমরা বলি মডার্ন রাজাকার। যারা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আবারো ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে পাহাড় দখল করে এসব বসতিতে গড়ে উঠেছে মাদকচক্র। মূল এলাকা থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় অবাধে মাদক সেবন-বিক্রিসহ চলছে নানা অবৈধ কাজ।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বায়েজিদ থানার ওসি প্রিটন সরকার জয়নিউজকে বলেন, আসলে এ থানার অধীনে তেমন বেশি জায়গা পড়েনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি অবৈধ ব্যবসা এবং মাদক চোরাকারবারিরা যাতে কোনো রকম অস্তানা তৈরি করতে না পারে। যারা বর্তমানে এ ধরনের অপকর্ম করছে আমাদের কাছে যদি খবর আসে তাহলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিব।