প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য একই ব্যক্তির নমুনা খুলনার পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট হলেও তা ঢাকায় পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।
তবে বিষয়টিকে ল্যাব সংক্রান্ত সমস্যা নয় দাবি করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নমুনা সংগ্রহের সময় গলায় ভাইরাসের উপস্থিতি কম-বেশি থাকার উপর নির্ভর করেই ফলাফল ‘পজিটিভ’ বা ‘নেগেটিভ’ হয়। এটি কোনো ভুল নয়।
বৃস্পতিবার (২৮ মে) খুলনা জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের এক বিজ্ঞপ্তিতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের করোনা পজিটিভের বিষয়টি উল্লেখ করে জানানো হয়, খুলনা জেলায় সর্বমোট ৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন তিন জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন।
সূত্র মতে, খোদ খুলনা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (৩০) করোনার নমুনা পরীক্ষায় খুলনার পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট হলেও তা ঢাকায় পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। ওই ম্যাজিস্ট্রেট এখন ঢাকায় নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক (মিডিয়া সেল) বলেন, খুলনা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এক সপ্তাহ আগে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। তখন খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) পিসিআর ল্যাবে তার করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হাসপাতালে তার করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি এখন ঢাকায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে নেওয়া হবে।
এর আগেও খুমেক ল্যাবের নমুনার ফলাফল নেগেটিভ ধরা পড়ার পর রোগীরা ঢাকার পরীক্ষা করিয়ে ফলাফল পজিটিভ পেয়েছেন।
সর্বশেষ বুধবার (২৭ মে) সাতক্ষীরার দুই নারীর নমুনা পরীক্ষায় ঢাকা আইইডিসিআরে করোনা ধরা পড়ে। তবে দুজনের একই নমুনা প্রথমে খুলনায় পরীক্ষা হলেও রিপোর্ট নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার সখীপুর ইউনিয়নের এক গৃহবধূর (৪৫) জ্বর, সর্দি ও কাশি থাকায় করোনা সন্দেহে ১৪ মে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ১৭ মে রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। কিন্তু ওই নারীর লক্ষণ নিয়ে তখনো সন্দেহ থাকায় সেই নমুনা ঢাকার আইইসিডিআরে পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে জানানো হয়, ওই গৃহবধূর করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ।
এছাড়া বল্লী ইউনিয়নের এক কলেজছাত্রের সম্প্রতি করোনা উপসর্গ থাকায় তার পরীক্ষা করলে পজিটিভ আসে। ওই সময় ছাত্রের মায়ের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে প্রতিবেদন নেগেটিভ এলে সেই নমুনা আবার পাঠানো হয় ঢাকা আইইডিসিআরে। ঢাকা থেকে জানানো ওই নারীর পরীক্ষার ফল পজিটিভ।
এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ‘খুমেকের ল্যাবে কোনো সমস্যা নেই। তবে নমুনা সংগ্রহের সময় গলায় ভাইরাসের উপস্থিতি কম বেশি থাকার উপরই মূলত ‘পজিটিভ’ বা ‘নেগেটিভ’ ফলাফল নির্ভর করে।’