কক্সবাজারে নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে পাঁচ জনকে গ্রেফতারের কথা জানালেও পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিন জনকে গ্রেফতারের কথা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মোসলেম উদ্দিন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো— কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ বাহারছড়া গ্রামের আবুল বশরের ছেলে রেজাউল করিম (৩০), একই গ্রামের মৃত সালাহ আহমদের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) ও চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের উলুবনিয়া গ্রামের মৃত মোক্তার আহমদের ছেলে মামুনুর রশীদ (২৮)। এর আগে হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ নিয়ে আলোচিত মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘পর্যটককে ধর্ষণের মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
দুপুর ১টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘পাঁচ জন নয়; পর্যটককে ধর্ষণের মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছি আমরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তবে ধর্ষণকাণ্ডের মূলহোতা আশিকুল ইসলামকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি।’
এ সময় প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
প্রসঙ্গত, ২২ ডিসেম্বর সকালে স্বামী-সন্তানসহ ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যান ওই নারী পর্যটক। ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি পাঁচতলা হোটেলে। ওই দিন বিকালে স্বামী-সন্তানসহ লাবণী বিচে যান তিনি। রাতে হোটেলে ফেরার পথে এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এতে স্বামীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক। বাধা দিলে তার সঙ্গেও তর্কে জড়ায় যুবক। ওই সময় আরও দুই যুবক ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। তারা স্বামী-সন্তানকে ইজিবাইকে তুলে দিয়ে ওই নারীকে আলাদা করে ফেলে।
পরে ওই এলাকার একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে তিন জনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তাকে। এরপর স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে এক যুবক স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তাকে হোটেলের রুমে নিয়ে আবারও ধর্ষণ করে। শেষে রুমের দরজা বাইর থেকে আটকে পালিয়ে যায়। হোটেল থেকে বেরিয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন ওই নারী। পুলিশের কোনও সহায়তা না পেয়ে র্যাবকে খবর দেন। তখন হোটেলে আসে র্যাব।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভুক্তভোগীর স্বামী কক্সবাজার সদর মডেল থানায় চার জনের নাম উল্লেখ করে মোট সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় গ্রেফতার জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ধর্ষণ মামলার মূল আসামি আশিকুল ইসলাম চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পায়। ছিনতাই, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে তার নামে।