এক মাসের মধ্যে কর্ণফুলী নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করা হবে।
নগরের ফিরিঙ্গি বাজার ফেরিঘাট এলাকায় এ হুঁশিয়ারি দেন জলাধার ও জলাশয় রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) থমকে যাওয়া নদীর দু’তীরের উচ্ছেদ অভিযান শুরুর দাবিতে জলাশয় ও জলাধার রক্ষা কমিটি, চট্টগ্রামের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্য এ কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী হচ্ছে বাংলাদেশের হৃদপিণ্ড। আর এই কর্ণফুলীকে হত্যা করা মানে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে হত্যা করা। একটি মানুষকে যদি খুন করা হয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ফাঁসি দেওয়া হয়। তাহলে ১৮ কোটি মানুষকে হত্যা করার শাস্তি কী হবে? যারা কর্ণফুলীকে দখল করেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া আহ্বান জানান তিনি।
বক্তারা বলেন, হাইকোর্টের রিট কেন অমান্য করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ, আমরা তার জবাব চাই। আমরা প্রত্যাশা করি বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসন সমন্বয় করে পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান চালাবে।
স্থানীয় কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব হাইকোর্টের আদেশ থাকা সত্ত্বেও অদৃশ্য থাবায় কর্ণফুলীর দখল উচ্ছেদ হচ্ছে না অভিযোগ করে বলেন, আমরা চাই কর্ণফুলী নদীর পাড়ে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, তা উচ্ছেদ করা হোক। যদি কর্ণফুলী না বাঁচে কীভাবে আয় হবে। কর্ণফুলী বাঁচলে, চট্টগ্রাম বাঁচবে, বাংলাদেশ বাঁচবে। যদি কর্ণফুলী না বাঁচে চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচবে না। আমরা প্রত্যাশা করি অচিরেই আবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নদী বাঁচানোর আন্দোলনে আমিও পাশে আছি। দখল, দূষণ নিয়ে যেকোনো তথ্য আমাকে জানাবেন, আমি পাশে থাকবো। আমি নিজেও লক্ষ্য রাখবো। আমরা যদি প্রত্যেকে একেকজন আদর্শ হতে পারি, তাহলে কর্ণফুলী রক্ষায় আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।
তিনি বলেন, কর্ণফুলীর পাশ ঘিরে আমার ৫ বছরের পথচলা। আপনারা আজকে নদীর রক্ষার জন্য যে দাবি করছেন এটা আমারও অন্তরের দাবি। কর্ণফুলীর দখলের কারণেই আজকে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আপনি যদি আপনার ড্রেনের পাশে ময়লা না ফেলতেন তা হলে আজকের এই জলাবদ্ধতা হতো না।
একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আশির দশকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী আকবর চৌধুরী, একুশে পত্রিকার সম্পাদকীয় পরামর্শক নজরুল কবির দীপু, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, জুনিয়র চেম্বারের পরিচালক তরুণ উদ্যোক্তা টিপু সুলতান সিকদার, নগর যুবলীগ নেতা ও সংগঠক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, বঙ্গবন্ধু শিশুকিশোর মেলা চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন, এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম-চট্টগ্রামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, আলোর প্রতিষ্ঠাতা মিরাজুল হক, স্পোটিভ কোকোলোকোর কর্ণধার শেখ মোহাম্মদ জুলফিকার বিপুল, ডেইলি স্টারের স্টাফ করেসপন্ডেট মোস্তফা ইউসুফ, জাতীয় টেলিভিশন বিতার্কিক ইশরাত জাহান ইমা, প্রত্যাশা বাংলাদেশ’র সভাপতি নেছার আহমেদ খান, ইন্ডিপেন্ডেট টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ইফতিখার ইফতি, তরুণ সংগঠক যিকরুল হাবিবীল ওয়াহিদ, তরুণ ক্রীড়া সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী সাইফুল ইসলাম খান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি নাসিম উদ্দীন।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দীন, বিটিভির বার্তা প্রযোজক সুরেশ কুমার দাশ, একুশে পত্রিকার সম্পাদকীয় পরামর্শক এইচএম জামাল উদ্দীন, প্রাক্তন ব্যাংকার ও শিল্পোদ্যোক্তা গিয়াস উদ্দীন, রোটারিয়ান সাজিদ হাসান, যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির মাসুদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আরবান হেলথ এর প্রাক্তন কর্মকর্তা আনসার উদ্দীন, পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ বুলবুল অর্পণ, চট্টগ্রামের পদুয়া সমিতির মুহাম্মদ ইদ্রীস, মুহাম্মদ খোরশেদ, রাসেল আহমেদ, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা হারুন অর রশীদ হৃদয়, তাকিবুল বশর, নুরুল আলম ও সুহাইল আকতার খান প্রমুখ।
জয়নিউজ/বিআর