কৃষকের হাতে তামাকের বিষ

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে হচ্ছে তামাক চাষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চাষ হচ্ছে তামাকের। এতে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে তামাক চুল্লিতে জ্বালানি কাঠ ব্যবহারে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল।

- Advertisement -

পার্বত্য জেলাগুলোর আবহাওয়া ও মাটি তামাক চাষের জন্য বেশ উপযোগী। অন্য ফসলের চেয়ে পাহাড়ি জমিতে উন্নত মানসম্পন্ন তামাকের ভালো ফলন হয়। তাই পাহাড়ের ফসলি জমি, বিদ্যালয় ও বাড়ির আঙ্গিনায়ও তামাক চাষ হচ্ছে। খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা, মাটিরাঙ্গা, রামগড় ও মানিকছড়িসহ কয়েকটি উপজেলায় বিস্তৃত হচ্ছে তামাক চাষ। তামাকের আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। কৃষকদের তামাক চাষের জন্য অগ্রিম টাকা, সার ও কীটনাশকসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে টোব্যাকো কোম্পানিগুলো। বেশি মুনাফার প্রলোভনে তারা কৃষককে উদ্বুদ্ধ করছে তামাক চাষে। লাভের আশায় তামাক চাষে জড়াচ্ছে কৃষক।

- Advertisement -google news follower

জেলার দীঘিনালা উপজেলায় তামাক চাষ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশেও চাষ হচ্ছে তামাকের। ফলে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

দীঘিনালার মেরুং ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রতন বলেন, এলাকার অধিকাংশ পাহাড়ি-বাঙালি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। আয়ের বিকল্প কোনো পথ না পেয়ে তাদের অনেকেই ক্ষতিকর তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে প্রভাবশালীরা ট্যোবাকো কোম্পানিগুলোকে সহযোগিতা করায় বন্ধ হচ্ছে না তামাক চাষ।

- Advertisement -islamibank

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সফর উদ্দিন জানান, চলতি বছর ৫৯৭ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদেরকে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি পরিসংখ্যানের বাইরে প্রায় চারগুণ বেশি জমিতে চাষ হচ্ছে তামাকের। এছাড়া তামাক চাষ বিস্তৃত হওয়ায় চুল্লির সংখ্যাও বাড়ছে। চুল্লিগুলোতে ব্যাপকহারে জ্বালানো হয় বনের কাঠ।

রামগড় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জুলফিকার আলী ফিরোজ জানান, তামাক চাষে মাটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। কৃষক এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত নয়।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, আইনে তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে নিষিদ্ধ করা হয়নি। কেউ যদি স্ব-প্রণোদিত হয়ে তামাক চাষ করে, সেক্ষেত্রে নিষেধ করা যায় না। এক্ষেত্রে টোব্যাকো কোম্পানিগুলো বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে কৃষককে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে।

জয়নিউজ/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM