‘নাশকতা-নৈরাজ্য, সরকারি স্থাপনার ওপর হামলাকারী ও হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণকারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের পক্ষে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী সুপারিশ বা তদবির করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোমবার মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ছিনতাই করে বিএনপি-জামায়াত ও শিবির সরকার উৎখাতের যে জঘন্য ধ্বংসাত্মক মরণ কামড় দিয়েছে তার বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে এক মুহূর্তও অপেক্ষা করার সুযোগ নেই। এখন থেকেই চিহ্নিত রাষ্ট্র ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ন্যূনতম ছাড় না দিয়ে সমূলে উৎখাত করার পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিয়ে নেতা-কর্মীদের সার্বক্ষণিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। এই অপশক্তিকে রুখতে হলে আমাদের পরিকল্পনা মাফিক এগুতে হবে এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিটি এলাকায় ও মহল্লায় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরবিরোধী দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে দেশব্যাপী স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রত্যেক পাড়ায় মহল্লায় দেশপ্রেমী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে সতর্ক অবস্থান থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনগণের জান-মাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে। একই সঙ্গে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে প্রতি ওয়ার্ডে তৃণমূল স্তরে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।
তিনি বলেন, নাশকতা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে। একই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরের যেসব দুষ্কৃতকারী পাড়া মহল্লায় ঘাপটি মেরে আছে, তাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি যারা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও নাশকতায় উস্কানি দিচ্ছে তাদেরও একটি তালিকা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পেশ করতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চসিক মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নিকট অতীতে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-বিএনপি-শিবিরের বিরুদ্ধে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় সাংগঠনিক শক্তির ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে। এই অভিজ্ঞতায় শানিত হয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীকে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে।
সভায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই বুধবার বেলা ১১টায় কাজীর দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভাকে সফল করার জন্য প্রস্তুতিগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিন ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বাদ আসর আন্দরকিল্লা জুমা মসজিদে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে মাসব্যাপী জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি হিসেবে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে। আগস্ট মাসে প্রতিটি ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবস কর্মসূচি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে পালন করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন, এম জহুরুল আলম দোভাষ, আলহাজ আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সাংসদ নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সম্পাদকম-লীর সদস্য আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান মাহমুদ শমসের, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মসিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক মিয়া, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবু তাহের, হাজী মো. হোসেন ও শহীদুল আলম, জহর লাল হাজারী।
জেএন/এমআর
